ইতোমধ্যেই আপনারা জেনেছেন বিসিএস পরীক্ষার আবেদন করার সময় ক্যাডার পছন্দক্রম দেওয়া লাগে। যেহেতু সবার চাহিদা আলাদা আলাদা তাই পছন্দক্রমও আলাদা হওয়াই স্বাভাবিক। নিচে বিভিন্ন ক্যাডারের পদায়ন, পদোন্নতি, আর্থিক সুবিধা, সমস্যা নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করলাম যাতে পছন্দক্রম দিতে কিছুটা হলেও দ্বিধাদ্বন্দ্ব কম কাজ করে।
পররাষ্ট্র ক্যাডার
বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের চাকরি হলে আপনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব হিসেবে যোগদান করবেন। প্রথম অবস্থায় কাজের চাপ অনেক বেশি পাবেন। টাইপিং থেকে শুরু করে সংসদ অধিবেশন চলাকালীন পার্লামেন্টে ডিউটি করতে হতে পারে। আর গাড়ী সার্ভিস বলতে বাসায় যাওয়া আসা করার জন্য মাইক্রোবাস সার্ভিস পাবেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকার বেইলী রোডে।
চাকরি স্থায়ী হলে আপনাকে দূতাবাসে পদায়নের জন্য বিবেচনা করা হবে। সেখানে থার্ড সেক্রেটারী হিসেবে যোগ দেবেন। ছয় বছর দুই দেশে কাজ করার পর তিন বছরের জন্য ঢাকায় পোস্টিং পাবেন। এভাবে চক্রাকারে চলবে।
দূতাবাসে পদায়ন হলে দেশের নিয়মিত স্যালারীর বাইরে ফরেন ভাতা (মাসে ১২০০ ডলার), বাসা ভাড়া (বছরে ২০০০০ ডলার), দুই জন ছেলেমেয়ের পড়াশুনার খরচ, পরিবারের চিকিৎসার ৯০% খরচ ও বিনোদন ভাতা (মাসিক ৩০০ ডলার) পাবেন। যদিও দেশে আনতে ট্যাক্স দিতে হবে তথাপিও পোস্টিংয়ে থাকা অবস্থায় ট্যাক্স ফ্রি গাড়ী কিনতে পারবেন। দেশী বিদেশী অনেক ট্রেনিং পাবেন। এখান থেকেও ভালো অংকের একটা টাকা পকেটে ভরতে পারবেন।
লোকবল কম বলে পদোন্নতির সুযোগ ভালো । প্রায় সবাই নাকি রাষ্ট্রদূত হয়। রাষ্ট্রদূতরা যেহেতু বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে তাই ভালোই সম্মান পাবেন। বিভিন্ন দেশের বড় বড় ব্যক্তিদের সাক্ষাত পাবেন। আর বিদেশ ভ্রমণ তো আপনার কাছে পান্তা ভাত।
মন্ত্রণালয়ে পদক্রমঃ সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > পরিচালক > মহাপরিচালক > অতিরিক্ত সচিব > সচিব।
দূতাবাসে পদক্রমঃ Third Secretary > Second Secretary > First Secretary > Councilor > Minister > Ambassador/High Commissioner.
অ্যাডমিন ক্যাডার
বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের চাকরি হলে আপনাকে মাঠ প্রশাসনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করবেন।। এই ক্যাডারের প্রধান কাজ হলো অন্য সকল ক্যাডার অফিসারদের কাজের সমন্বয় করা। মোবাইল কোর্ট পরিচলনা করাও একটা কাজ। কাজের চাপ আছে মারাত্বক। ছুটি ছাটা কম।
ম্যাজিস্ট্রেট, এসি (ল্যান্ড), ইউএনও, ডিসি, বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। যোগদানের দুই তিন বছর পরেই এসি (ল্যান্ড) হিসেবে পোস্টিং পাবেন। ইউএনও হিসেবে বাড়ী ও গাড়ীর সুবিধা পাবেন। উপজেলা ও জেলায় আপনাকে অনেকেই চিনবে।
সচিবালয়ে পোস্টিং হলে সরকারের পাঁচটি সচিবালয়ে (বাংলাদেশ সচিবালয়, পাবলিক সার্ভিস কমিশন সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয়) সহকারী সচিব হিসেবে যোগদান করবেন। দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসেও পদায়ন হতে পারে।
এই ক্যাডারের সবচেইয়ে বড় আকর্ষন হলো বৈচিত্রময়তা। অন্য ক্যাডাররা যেখানে নিজের কাজটা নিয়েই থাকবে সেখানে চাকরিজীবনে আপনি অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পাবেন। মন্ত্রনালয়, সরকারের সকল অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, বোর্ড, ইন্সটিটিউট, কর্পোরেশনগুলোতে পোস্টিং পাবেন। অর্থাৎ জুতা সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ আপনার বিচরণক্ষেত্র।
ট্রেনিং ও স্কলারশীপ ভালোই পাবেন। এতে বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে আর্থিকভাবেও লাভবান হতে পারবেন। লিয়েন ও প্রেষনে কাজ করার ভালো সুযোগ আছে। আর লিয়েন ও প্রেষণে থাকলে আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকার শাহবাগে।
সাধারণত আমলা বলতে আমরা অ্যাডমিন ক্যাডারকেই বুঝি। এই ক্যাডারে পদোন্নতি মোটামুটি। ছয় বছরে ইউএনও আর দশ বছরে উপসচিব হওয়ার আশা করতে পারেন। একদম কাছে থেকে সাধারণ জনগণের সেবা করার জন্য এই ক্যাডার সবচেয়ে ভালো।
মাঠ পর্যায়ে পদক্রমঃ সহকারী কমিশনার > সিনিয়র সহকারী সচিব/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক > জেলা প্রশাসক > অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার > বিভাগীয় কমিশনার
সচিবালয়ে পদক্রমঃ সহকারী সচিব > সিনিয়র সহকারী সচিব > উপসচিব > যুগ্মসচিব > অতিরিক্ত সচিব > সচিব
পুলিশ ক্যাডার
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এএসপি (এসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেন্ডেট অফ পুলিশ) হিসেবে যোগদান করবেন। সেখান থেকে আপনাকে এক বছরের প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহীতে পাঠানো হবে। কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে আপনাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশ সাইন্সে মাস্টার্স ডিগ্রী প্রদান করা হবে। এরপর আপনার পোস্টিং জেলা পুলিশে হবে। সেখানে এএসপি হিসেবে কাজ করবেন। আপনার পোস্টিং বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশে হতে পারে। মেট্রোপলিটন পুলিশে হলে আপনি সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন।
সিভিল সার্ভিসের ক্যাডারগুলোর মধ্যে একমাত্র পুলিশ ক্যাডারের সব অফিসারদেরই ইউএন মিশনে যাওয়া সম্ভব। মিশনে গেলে এক বছরে আপনি বিশ থেকে চল্লিশ লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন। দেশে থাকলে ঝুকি ভাতা পাবেন। রেশন পাবেন। পুলিশ হাসপাতালে সুচিকিৎসা পাবেন।
যোগদানের কিছুদিন পর থেকেই বাড়ী, গাড়ী, ড্রাইভার, বডিগার্ড ইত্যাদি বরাদ্দ পাবেন। তাছাড়া যেখানেই পোস্টিং হোক না কেন থাকা ও যাতাযাতের ব্যবস্থা সরকারীভাবে দেওয়া হবে। দেশে ও বিদেশে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ আছে।
মূল ধারার পুলিশিং ভালো না লাগলে আপনি স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (SSF), র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (RAB), ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (DB), স্পেশাল ব্রাঞ্চ (SB), সিআইডি (Criminal Investigation Department), পিবিআই (Police Bureau of Investigation), সোয়াট (Special Weapond And Tactics), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (APBn), এসপিবিএন (SPBn), রেলওয়ে পুলিশ, শিল্প পুলিশ, পর্যটন পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ইত্যাদিতে কাজ করতে পারবেন।
তবে এই ক্যাডারে নয়টা পাঁচটা ডিউটি বলে কিছু নাই। রাতে ঘুমাচ্ছেন হটাৎ শুনবেন অমুক জায়গায় অমুক ঘটনা ঘটেছে এখনই যেতে হবে। সমাজের অন্ধকার দিকের সাথে ভালোভাবে পরিচিত হবেন। সারাদিন খুন, ডাকাতি, হত্যা, ফাঁসি, লাশ, চোরাচালান ইত্যাদি নিয়েই থাকতে হতে পারে। ছুটি ছাটাও কম।
জেলায় পদক্রমঃ সহকারী পুলিশ সুপার > সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত পুলিশ সুপার > পুলিশ সুপার > অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক > উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক > অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক > মহাপুলিশ পরিদর্শক
মেট্রোপলিটানে পদক্রমঃ সহকারী পুলিশ কমিশনার > সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার > অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার > উপ পুলিশ কমিশনার > যুগ্ম পুলিশ কমিশনার > অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার > পুলিশ কমিশনার
কাস্টমস অ্যান্ড এক্সাইজ ক্যাডার
বিসিএস কাস্টমস ক্যাডারে চাকরি হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারী কাস্টমস কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন। শুল্ক ও আবগারী বিভাগ সরকারের পক্ষ থেকে পরোক্ষ কর আহরণ করে। শুল্ক গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করার সুযোগ আছে। কাস্টম হাউজ, স্থল বন্দর, বন্ডে কাজ করতে পারবেন।
পদোন্নতি দ্রুত। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সদস্য। শুল্ক ফাকি ও চোরাচালান ধরতে পারলে ইনসেন্টিভের ব্যবস্থা আছে। গাড়ী সুবিধা পাবেন। দেশে ব্যবসা বাণিজ্য যত বাড়বে এই ক্যাডারের কাজ তত বাড়বে। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় চট্টগ্রামে।
পুলিশ ক্যাডারের মতো এই ক্যাডারেরও ইমেজ সংকট আছে। এখানে চাকরি করলে অনেকেই মনে করে লোকটা ঘুষখোর।
পদক্রমঃ সহকারী কাস্টমস কমিশনার > উপ কাস্টমস কমিশনার > যুগ্ম কাস্টমস কমিশনার > অতিরিক্ত কাস্টমস কমিশনার > কাস্টমস কমিশনার > জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য
নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডার
বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি মহাহিসাব নিরীক্ষক এর কার্যালয়ে সহকারী হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে যোগদান করেন । তবে পোস্টিং ভেদে ভিন্ন ভিন্ন নাম হতে পারে । তবে নাম যাই হোক কাজ প্রায় একই।
সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন / পেনশন / ট্রেনিং বিল / জ্বালানি বিল / ক্রয়সহ যেখানেই সরকারী অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত সেখানেই এই ক্যাডারের কাজ। তাই প্রায় সব অফিসেই আপনাদের পদচারণা থাকবে। যেহেতু ভুল ধরা আপনার কাজ তাই সব অফিসেই সম্মান পাবেন। গাড়ী সুবিধাও আছে।
সকল মিনিষ্ট্রি ও বিভাগে প্রায় ৪৯ টি Chief Accounts Officer এর অফিস রয়েছে । প্রত্যেক অফিসে একজন CAO এর অধীনে A-CAO গণ কাজ করেন । এই ক্যাডারে ৯০% পোষ্টিং ঢাকায় হয় । এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক।
পদক্রমঃ সহকারী হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > উপ-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > উপ-হিসাব নিরীক্ষক অতিরিক্ত হিসাব ও নিয়ন্ত্রক > হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক > মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক
কর ক্যাডার
বিসিএস কর ক্যাডারে চাকরি হলে আপনাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে যোগদান করবেন। আয়কর বিভাগ সরকারের একমাত্র বিভাগ যা দেশের জন্য প্রত্যক্ষ রাজস্ব আহরণ করে। আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় কাজের চাপ বাড়ে। তাছাড়া অন্যসময় মোটামুটি কাজ থাকে।
সরকারী বেসরকারী কোন আয়ের বিষয়ে সিআইসি গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। উক্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে আহরিত রাজস্বের জন্য ইনসেন্টিভ পেয়ে থাকেন। গাড়ী সুবিধা পাবেন। পদোন্নতি দ্রুত। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সদস্য।
সহকারী কর কমিশনার > উপ কর কমিশনার > যুগ্ম কর কমিশনার > অতিরিক্ত কর কমিশনার > কর কমিশনার > জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য
আনসার ক্যাডার
বিসিএস আনসার ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি আনসার ও ভিডিপি অধিদপ্তরের অধীনে সহকারী জেলা এ্যাডজুটেন্ট হিসেবে যোগদান করবেন। এই জবের ঝামেলা কম। শুরু থেকেই গাড়ী ও বাড়ী সুবিধা আছে। পদোন্নতি ভালোই। মহাপরিচালক পর্যন্ত হতে পারবেন। এর পরের পদগুলো প্রতিরক্ষা বাহিনী (আর্মি, নেভী, এয়ারফোর্স) থেকে আসেন। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় গাজীপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমীতে।
পদক্রমঃ সহকারী জেলা এ্যাডজুটেন্ট > জেলা এ্যাডজুটেন্ট > উপ-পরিচালক > পরিচালক > উপ-মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
তথ্য ক্যাডার
বিসিএস তথ্য ক্যাডারে আপনার চাকরি হলে আপনি সহকারী পরিচালক বা সমমানের পদে যোগদান করবেন। জেলায় তথ্য অফিসার হিসেবে কাজ করতে পারবেন। সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) পদে যোগদান করলে টিভিতে ও বেতারে অনুষ্ঠান প্রচারের সকল দায়িত্বে থাকবেন।
মন্ত্রণালয়ে মাননীয় মন্ত্রীগণের Public Relations officer (PRO), বিদেশে কয়েকটা দূতাবাসে তথ্য কর্মকর্তা, এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অফিসেও তথ্য কর্মকর্তা হতে পারেন। এই ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ প্রধান তথ্য অফিসার।
সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে চাকরি হলে আপনি সরকারি কলেজসমূহে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করবেন। ছেলে-মেয়েদের পড়াবেন। এই ক্যাডারে অন্যান্য ক্যাডারের মত ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারবেন না। অধ্যক্ষ স্যারদের জন্য পর্যন্ত গাড়ী সুবিধা নাই। অবকাশ বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে পরিগণিত হবেন। আত্মীকরণ সমস্যা তো আছেই।
পরীক্ষার হলে ইনভিজিলেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন ও খাতা মূল্যায়ন আপনি গড়ে প্রতি মাসে দশ থেকে পনেরো হাজার টাকা পাবেন। ইচ্ছা করলে প্রাইভেট টিউশন করেও অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। দেশে ও দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা ও ট্রেনিংয়ের সুযোগ আছে। সেখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হবে। বিভাগীয় ট্রেনিং হয় ঢাকা কলেজের পাশে নায়েমে।
এছাড়া বিভিন্ন কমিটি যেমনঃ ক্রয় কমিটি, টেন্ডার কমিটি, স্পোর্টস কমিটি, কালচারাল কমিটি, ভর্তি কমিটি, ফরম ফিলাপ কমিটি, পরীক্ষা কমিটি, বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি ইত্যাদি কমিটির দায়িত্ব পালন করে আপনি আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবেন। অনার্স বা মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি থাকলে একটা ইনক্রিমেন্ট বেশি পাবেন। এমফিল করলে দুইটা আর পিএইচডি করলে তিনটা ইনক্রিমেন্ট পাবেন।
পদোন্নতি মোটামুটি। তবে শিক্ষা ক্যাডার মানে শুধু কলেজে শিক্ষকতা করাই না। আপনি দেশের সকল শিক্ষাবোর্ড, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমী (নায়েম), জাতীয় কারিকুলাম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন।
যেখানে পোস্টিং পাবেন সেখানকার মানুষের নির্মোহ সম্মান ও ভালোবাসা পাবেন। আপনার গ্রহণযোগ্যতা থাকবে বেশ ভালো। শিক্ষা বিষয়ে কোন নিয়োগ হলে আপনাকে ডাকা হবে। ভালোই উপভোগ করবেন।
কলেজে পদক্রমঃ প্রভাষক > সহকারী অধ্যাপক > সহযোগী অধ্যাপক > অধ্যাপক
অধিদপ্তরে পদক্রমঃ সহকারী পরিচালক > উপপরিচালক > পরিচালক > অতিরিক্ত মহাপরিচালক > মহাপরিচালক
[ডিসক্লেইমারঃ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে তথ্য নিয়ে লেখাটি লেখা হয়েছে তাই তথ্যে ভুল থাকতে পারে। আশা করি, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। লেখা থেকে আপনাদের সামান্য উপকার হলেই কেবল আমার পরিশ্রম সার্থক।]
লিখেছেনঃ সৈকত তালুকদার; ৩৬ তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা)