বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি নির্দেশনা 

তপন সরকার রাজ 

বিসিএস পুলিশ (সুপারিশপ্রাপ্ত )

মেধাক্রম-৩২

৩৮ তম বিসিএস

,,,,,,,ইদ মোবারক,,,,,,

বেশ কিছুদিন পূর্বে লিখেছিলাম ২ পর্বে বিসিএস রিটেন প্রস্তুতি সম্পর্কে লিখবো। কিন্তু বিসিএস রিটেনের প্রস্তুতির ক্ষেত্র এতটাই সুবিস্তৃত যে ২ পর্বে লিখে হয়ত দায়ভার এড়ানো যাবে, কিন্তু দায়িত্ব পালন সুসম্পন্ন হবে না। তাই রিটেনের প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে একেকদিন লিখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে করে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়। 

আবারো বলে রাখি এটা শুধুমাত্র আমার অনুসরণ করা পদ্ধতি, আর সফলতার কোনো নির্দিষ্ট কৌশল থাকে না। 

বিসিএস রিটেন-ইংরেজি

৩ টি কারনে এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

এক, আমরা অধিকাংশই ইংরেজিতে দূর্বল, 

দুই, রিটেন পরীক্ষায় সর্বপ্রথম ইংরেজি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়,

তিন, ২০০ মার্ক, অন্য যেকোনো বিষয় থেকে ইংরেজিতে বেশি মার্ক যোগ করা সহজতম। 

বিসিএস ইংরেজি রিটেনে ২ টি অংশ থাকে। পার্ট-এ, এটি অনেকটাই আমাদের ৯ম-১০ম শ্রেণির ইংরেজি ২য় পত্রের মতো হয়। যেখানে ১টি আনসীন প্যাসেজ থাকে, যাকে কেন্দ্র করে ১-৭ নং পর্যন্ত ১০০ মার্কের প্রশ্ন থাকে। আর পার্ট -বি তে আমাদের ৯ম-১০ম শ্রেণির ইংরেজি ২য় পত্রের রিটেন অংশের অনুরূপ ৮-১০ তিন ধরনের প্রশ্ন থাকে। 

এখন আমরা প্রত্যেক ধরনের প্রশ্নের ধরন এবং প্রস্তুতি প্রক্রিয়া বুঝবো।

১ নং প্রশ্ন, 

এখানে প্রদত্ত আনসীন প্যাসেজ ভিত্তিক ১০ টি প্রশ্ন থাকে, ৩*১০=৩০ মার্ক। যেখানে বলা হয়, প্যাসেজ থেকে হুবহু কপি না করে নিজের মতো উত্তর করতে হবে।

প্রস্তুতি -

আপনাকে অবশ্যই প্যাসেজটি স্কিমিং করে একটা আইডিয়া নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা প্যাসেজ থেকে ইনফরমেশন নিশ্চয়ই নিবো কিন্তু ডেসক্রিপশন লিখবো নিজের মতো। ইংরেজি বাক্য গঠন করার দক্ষতা অর্জন এক্ষেত্রে জরুরি। এ অংশে ভালো করার জন্য আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি ইংরেজি বই থেকে এই অংশ প্রতিদিন প্রাকটিস করতে হবে। নিজের মতো করে উত্তর করবেন আগে, তারপর বইয়ের সাথে মেলাবেন। উত্তর একইরকম হওয়ার দরকার নেই, সেন্সটা একইরকম হলেই হবে।

২ নং প্রশ্ন, 

৫ টি শব্দের প্যাসেজভিত্তিক অর্থ লিখতে হবে। ৫*১=৫ মার্ক।

প্রস্তুতি - প্যাসেজ বুঝতে পাড়ার দক্ষতাই এক্ষেত্রে মূল অস্ত্র। প্রতিদিন ইংরেজি দৈনিক পড়াই এর সহজতর সমাধান। 

৩ নং প্রশ্ন, 

পার্ট অব স্পিচ অনুযায়ী শব্দ পরিবর্তন, ১*৫=৫ মার্ক।

প্রস্তুতি - কতিপয় নিয়ম ও মুখস্থ করা যেতে পারে। তবে অনেক সময় প্রদেয় প্যাসেজেই কাঙ্ক্ষিত শব্দ পাওয়া যায়। 

৪ নং প্রশ্ন, 

বিপরীত শব্দ লিখে তার সাহায্য বাক্য তৈরী। ২*৫=১০ মার্ক।

প্রস্তুতি - এটার সমাধান একদম নিত্য, ভোকাবুলারি জানা ও সেন্টেন্স সম্পর্কে সামগ্রিক দক্ষতা।

৫ নং প্রশ্ন, 

প্যাসেজ থেকে কপি না করে ১০ টি শব্দ দিয়ে ১০ টি বাক্য তৈরি। ১০ মার্ক।

প্রস্তুতি - পূর্বের ন্যায় বাক্য তৈরীর দক্ষতা। 

৬নং প্রশ্ন, 

সামারাইজ ২০ মার্ক।

প্রস্তুতি - খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অল্প সময় বিনিয়োগ করে অধিক মার্ক পাওয়ার অংশ এটি। প্যাসেজের বিষয়টাকে নিজের মতো করে লিখতে হবে। প্যাসেজের বাক্যে নয়, প্যাসেজের তথ্যে। অনুশীলনই সমাধান, ৮৫-৯৫ শব্দের লেখাই উত্তম। কৌতূহলোদ্দীপক সূচনা ও সন্তোষজনক ফিনিশিং লাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

৭ নং প্রশ্ন, 

সংবাদ পত্রে প্রকাশের জন্য চিঠি। ২০ মার্ক।

প্রস্তুতি - সকলেই আমরা জ্ঞাত আছি এই ব্যাপারে। তারপরও বলছি, প্রতিদিন যেকোনো বিষয়ের উপর লেখালেখি এক্ষেত্রে কাজে দিবে। 

পার্ট- বি,

৮ নং প্রশ্ন, 

রচনা লিখতে হবে, ৫০ মার্ক।

প্রস্তুতি, 

মহাগুরুত্বপূর্ণ অংশ, এখানে ভালো করার কোনো বিকল্প নেই। প্রচুর পরিমাণ ইনফরমেশন দেয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি পর্যাপ্ত লেখাও গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রদেয় রচনাগুলো থেকে এমন একটা বেছে নিতে হবে, যে বিষয়টা আপনি বাংলা, বাংলাদেশ বা আন্তর্জাতিক বিষয় প্রস্তুতিতে পরেছেন। নির্দিষ্ট সংখ্যক রচনা মুখস্থ কোনো কাজে দেবে বলে আমি মনে করি না। এক্ষেত্রে আমি কখনো কোনো রচনা মুখস্থ করিনি। তবে প্রতি সপ্তাহে ১ দিন, যেকোনো একটি টপিক বাছাই করে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট লিখতাম। আমার আইইএলটিএস করা আছে বলে কখনোই লিখতে তেমন অসুবিধা হতো না। আমাদের পর্যাপ্ত অনুশীলন করতে হবে। 

একটি কথা মাথায় রাখবেন, রচনা অবশ্যই সবার শেষে আন্সার করতে হবে, যাতে সময় অনুযায়ী বড় বা ছোট করা যায়।

৯ নং প্রশ্ন, 

ট্রান্সলেশন ইংরেজি টু বাংলা, ২৫ মার্ক।

প্রস্তুতি - প্রত্যহ ইংরেজি দৈনিক পড়া, ইংরেজি খবরও শুনতে পারেন। অবশ্যই বাংলাদেশের চ্যানেলে, নতুবা সময় ক্ষেপনের তুলনায় ক্ষতিই হবে বেশি।

১০ নং প্রশ্ন, 

বাংলা টু ইংরেজি। ২৫ মার্ক।

প্রস্তুতি - পূর্বের ন্যায় অনুশীলন। খেয়াল রাখতে হবে অনুবাদ যেন ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড করে গেলাম এমন না হয়। ইঙ্গিতে বুঝাতে পারলে খুবই ভালো। যেমন - He has not eaten rice.   এখানে, সে ভাত খায় নি, লিখার পরিবর্তে, লোকটি অভুক্ত লিখাই শ্রেয়।

পরিশেষে একটা কথাই বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তার প্রতি অগাধ আস্হা, কঠোর পরিশ্রম আর পরোপকারী মনোভাব সম্পন্ন মানুষ কখোনই বিফল হয় না।

মনে রাখবেন, যে সমাজের জন্য বাঁচে সে তার দ্বারা সমাজ ও তার নিজের উভয়েরই উপকার হয়। আর যে শুধুমাত্র নিজের জন্য বাঁচে সে সমাজের গলগ্রহ ছাড়া আর কিছুই নয়।

ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। 

আমায় আশীর্বাদ করবেন।