Pages

বিসিএস প্রস্তুতি ।। BCS Preparation - Episode Four

৪১তম বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি 
ভূ-রাজনীতি
কোয়াড নিয়ে চাপা উত্তেজনা আর বৈশ্বিক চিপ-সংকট
‘উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লোমেসি’ হচ্ছে প্রথাগত কূটনৈতিক পদ্ধতির বিপরীতে সি চিন পিং সরকারের অনুসৃত চীনের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি। বিখ্যাত চীনা অ্যাকশন ফিল্ম ‘উলফ ওয়রিয়র ২’ থেকে টার্মটি নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সম্প্রতি এই কুটনীতির একটা প্রদর্শনী হয়ে গেল। চীনের রাষ্ট্রদূত সাফ জানিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া আর ভারতের সমন্বয়ে তৈরি হওয়া জোট কোয়াডে বাংলাদেশ যোগ দিলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘যথেষ্ট খারাপ’ হবে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অনেক বিশ্লেষকের কাছে এটা ছিল ‘নজিরবিহীন কাণ্ড’, কিন্তু চীনের কূটনীতির পদ্ধতি নিয়ে যাঁরা নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা জানেন, এটাই ‘উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লোমেসি’।
 

এই মন্তব্যের পরই প্রতিক্রিয়া জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ‘দেশের মঙ্গলের জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটাই আমরা করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘চীনের কাছ থেকে আমরা এ ব্যবহার আশা করিনি।’ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সার্বভৌমত্ব এবং পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারের বিষয়ে তাঁদের শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা জানিয়ে দেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে চীনের পক্ষ থেকে এরপর আরও কিছু কথা বলা হয়েছে, যা এক ধরনের কুটনৈতিক বাগ্মিতার চেয়ে বেশি কিছু না। প্রশ্ন হচ্ছে, কোয়াড বা আরও বৃহত্তর পরিসরে ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (আইপিএস) নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এত চাপান-উতোর কেন?

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পণ্যগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর এক-পঞ্চমাংশ যেতে না যেতেই আমরা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পণ্য জ্বালানি তেলের পক্ষে আর খুব বেশি দিন, সর্বোচ্চ দূরে থাক, মোটামুটি গুরুত্বও ধরে রাখা কঠিন হবে। অচিরেই সে জায়গা দখল করে নেবে (অনেকটা নিয়েছেও) রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস এবং সেমিকন্ডাক্টর চিপ।

নিওডাইমিয়াম, ইউরোপিয়াম, প্রমেথিয়াম, স্ক্যান্ডিয়ামসহ মোট ১৭টি মৌলিক পদার্থকে একসঙ্গে বলে ‘রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস’। আমাদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান পর্যন্ত অতি উচ্চ প্রযুক্তির সব পণ্যে এই মৌলগুলোর মধ্যে কয়েকটি কিংবা অন্তত একটি পাওয়া যাবেই। এই মৌলিক পদার্থগুলোর নিষ্কাশন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা একচ্ছত্রভাবে চীনের হাতে আছে।


আর যে পৃথিবীতে আমরা বাস করি, গত কয়েক দশকে সেটা গড়ে দিয়েছে সেমিকন্ডাক্টর চিপ। যেকোনো ইলেকট্রনিক পণ্য, হোক তা হোম এপ্লায়েন্স বা মেডিকেল যন্ত্র, পুরোপুরি চিপের ওপর নির্ভরশীল। এমনকি উড়োজাহাজ, চিরাচরিত গাড়ির মতো যেসব পণ্য মূলত ইলেকট্রনিকস না, সেগুলোতেও অনেক বছর থেকেই অনেক বেশি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যুক্ত হচ্ছে। আর এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগে গাড়িতেও চিপের ব্যবহার আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। যুদ্ধাস্ত্রগুলো ক্রমান্বয়ে স্মার্ট হয়ে উঠছে; সেগুলোতেও ব্যবহার করা হচ্ছে অসংখ্য মাইক্রোচিপ। শুধু তা-ই না, যেসব কারখানা এসব পণ্য তৈরি করছে, সেগুলোর মধ্যেও অসংখ্য মাইক্রোচিপের ব্যবহার আছে। বিশ্বের টেক জায়ান্টগুলো তাদের সার্ভার এবং ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের জন্য অকল্পনীয় পরিমাণ চিপ ব্যবহার করে। আর হালের বিটকয়েন কিংবা ইথিরিয়ামের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সির মাইনিংয়ের জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী কম্পিউটিং পাওয়ার দরকার, তাই সেখানেও ব্যবহৃত হচ্ছে বিপুল পরিমাণ চিপ।

ওদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কল্যাণে মানুষের করা বহু কাজ অটোমেশনের দিকে যাচ্ছে। আর ইন্টারনেট অব থিঙ্কসের মাধ্যমে একটি যন্ত্র অপর একটি যন্ত্রের সঙ্গে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হতে শুরু করছে। ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ফাইভ-জি ইন্টারনেট। প্রতিটা ক্ষেত্রেই চিপের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হচ্ছে। এখনই পৃথিবীতে চিপের বাৎসরিক চাহিদা হচ্ছে ১ ট্রিলিয়ন, অর্থাৎ মাথাপিছু ১২৮টি।

বছরের পর বছর ধরে স্বাভাবিক গতিতে ঘটনাগুলো ঘটছিল। এর মধ্যে একটা জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করল করোনা। বিশ্বব্যাপী করোনার লকডাউনে অফিসের কাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস, কেনাকাটাসহ মানুষের দৈনন্দিন কার্যাবলির বহু কিছু অনলাইনে চলে গেছে, যেগুলো আগে সেভাবে হতো না। ফলে এই সময় অনেকে যেমন কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিনেছেন, তেমনি অনেকে তাঁদের পুরোনো ডিভাইসগুলো আপগ্রেড করেছেন। ফলে এই সময়ে এসব পণ্যের চাহিদা গগনচুম্বী হয়েছে। সেটাই চিপ সরবরাহ ব্যবস্থায় খুব সিরিয়াস একটা সংকট তৈরি করেছে।

শুধু চিপ-সংকটে পড়ে আমেরিকার জেনারেল মটরস ২০২১ সালে তাদের কিছু কারখানা বন্ধ রাখার কারণে কমপক্ষে ২ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হবে। প্রায় একই পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ফোর্ড। চিপ-সংকটের কারণে জাপানের হোন্ডা এবং নিশান কোম্পানির বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ার খবর এর মধ্যে এসেছে। সার্বিকভাবে এক অটো ইন্ডাস্ট্রিতেই ২০২১ সালে ক্ষতির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার। কল্পনা করুন, চিপ-সংকটে সব খাত মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণটা তাহলে কত।

মনে হতে পারে, চাহিদা বেশি থাকলে বেশি করে চিপ উৎপাদন করলেই তো হয়। বিষয়টা এত সরল নয়, বরং ভীষণই জটিল। আমরা যারা কম্পিউটার বা স্মার্টফোন নিয়ে কিছুটা খোঁজখবর রাখি, তারা জানি চিপের আর্কিটেকচার ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে এসেছে। এখন একটা স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার চিপে কয়েক বিলিয়ন ট্রানজিস্টর থাকে। এমন সর্বাধুনিক চিপ তৈরি করা আক্ষরিক অর্থেই ‘রকেট সায়েন্স’-এর চেয়েও জটিল।
চিপ কোম্পানি তিন ধরনের হয়—ইন্টেল, স্যামসাংকে বলে ইন্টিগ্রেটেড ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারার্স অর্থাৎ এরা চিপ ডিজাইন এবং ম্যানুফ্যাকচার করে। 

কিছু কোম্পানি যেমন অ্যাপল, এনভিডিয়া, এএমডি শুধু চিপের ডিজাইন করে কিন্তু সেটা তারা তৈরি করে না; অন্যদের দিয়ে বানিয়ে নেয়। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (টিএসএমসি) অন্যদের ডিজাইন করে দেওয়া চিপ তাদের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী তৈরি করে দেয়। এই ধরনের কোম্পানিকে বলে ফাউন্ড্রি। অনুমান করি, টিএসএমসি নামের কোম্পানিটি আমাদের অনেকের কাছেই হয়তো অচেনা। তবে একটা তথ্যই সম্ভবত আমাদের অনেককে এই কোম্পানিটির ‘জাত’ চিনিয়ে দেবে—এই মুহূর্তে স্মার্টফোনের সবচেয়ে শক্তিশালী চিপ বলে মোটামুটি স্বীকৃত এ১৪ বায়োনিকসহ আইফোন এবং অ্যাপল কম্পিউটারের সব চিপ টিএসএমসি তৈরি করে দেয়। কোয়ালকম, এএমডি, এনভিডিয়া প্রভৃতি নানা কোম্পানির ডিজাইন করা চিপ তৈরি হয় টিএসএমসির ফাউন্ড্রিতে।

আরেকটি তথ্য আমরা জেনে রাখব, পৃথিবীতে এই মুহূর্তে শুধু টিএসএমসি এবং স্যামসাংই সর্বাধুনিক ৫ ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারের চিপ বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করতে পারে। তবে টিএসএমসি এগিয়ে যাচ্ছে আরও, তারা ৩ ন্যানোমিটার চিপ তৈরির কাজ শেষ করে এনেছে প্রায়; ২০২২ সালে তারা বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে।
উচ্চমানের চিপ উৎপাদনে টিএসএমসি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কোম্পানি, যার মার্কেট শেয়ার প্রায় ৩০ শতাংশ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কোম্পানিটিও তাইওয়ানের—ইউনাইটেড মাইক্রোইলেকট্রনিকস কোম্পানি (ইউএমসি), যার মার্কেট শেয়ার প্রায় ১৫ শতাংশ। আমরা কি বুঝতে পারছি তাইওয়ানের হাতে কী অবিশ্বাস্য পরিমাণ কৌশলগত ক্ষমতা আছে? আর যদি সর্বোচ্চ মানের চিপের কথা বলা হয়, তাহলে টিএসএমসির হাতে আছে প্রায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা।

ইলেকট্রনিকস পণ্যের সবচেয়ে বড় উৎপাদক চীন বেশ কয়েক বছর থেকেই নিজস্ব চিপ উৎপাদনের জন্য মরিয়া চেষ্টা করে যাচ্ছে। চীনের কোম্পানি সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন (এসএমআইসি) চিপ উৎপাদক কোম্পানি হিসেবে পৃথিবীতে পঞ্চম। বিগত ট্রাম্প সরকারের সময় এই কোম্পানিটির ওপর অবরোধ আরোপের কারণে তাদের চিপ উৎপাদনের সক্ষমতা বড় বাধার মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা কোনো বাধা না থাকলেও সর্বোচ্চ মানের চিপ উৎপাদনের পর্যায়ে পৌঁছাতে এই কোম্পানিটির আরও বহু বছর লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সর্বাধুনিক উৎপাদনের ফ্যাসিলিটি তৈরি করা ভয়ংকর ব্যয়বহুল, আর শুধু খরচ করলেই সেটা তৈরি করা যায় না, দরকার অকল্পনীয় প্রযুক্তিগত সক্ষমতা। চীনের জন্য ভীতির ব্যাপার হচ্ছে, এসএমআইসি বৈশ্বিক উৎপাদনের মাত্র ১১ শতাংশ উৎপাদন করে থাকে এবং ৫ ন্যানোমিটার কিংবা তার কম আর্কিটেকচারের মাইক্রোচিপ তৈরির আশপাশেও নেই তারা।

তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এটা মেনে চীনের সঙ্গে যে কারও কূটনৈতিক সম্পর্ক হওয়ার শর্ত চীনের দিক থেকে আছে। সুতরাং কাগজে-কলমে সবাই তাইওয়ানকে চীনের অংশ বলে স্বীকার করে। তাই মনে হতেই পারে, চীন যেকোনো সময় তাইওয়ান দখল (চীনের ভাষায় পুনরেকত্রীকরণ) করে নিতে পারে। সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট তাইওয়ানের একত্রীকরণের জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের কথাও স্পষ্ট করে বলেছেন। তার প্রমাণ দিতেই বোধ করি চীনা যুদ্ধবিমানের তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাইওয়ান সামরিক দিক থেকে যথেষ্ট আধুনিক হলেও চীনের তুলনায় শক্তি খুবই দুর্বল। আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি আছে, কিন্তু ‘আক্রান্ত’ হলে সরাসরি যুদ্ধে যোগ দিয়ে তাইওয়ানকে রক্ষা করবে, এমন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তবুও এই ধরনের একটা পরিস্থিতিতে আমেরিকার নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্বশক্তি কোনো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে না, এটাও নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। দক্ষিণ চীন সাগরের সংকটসহ নানা ইস্যুতে উদীয়মান শক্তি চীনের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের সংঘাতের আশঙ্কা থাকলেও স্বল্প মেয়াদে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহূর্তে একটা চরম সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। ঠিক এখানেই দুপক্ষের দল ভারী করে তোলার চেষ্টা, ঠিক এই কারণেই আরও বেশ কিছু দেশের মতো বাংলাদেশকে নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া।

২০২৪ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৫ বছর পূর্তি হবে। চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বয়স বেড়ে যাচ্ছে। চীনের অর্থনীতি আগের মতো আর চাঙা নেই এবং পূর্বাভাস হচ্ছে, ভবিষ্যতে এটা আরও খারাপের দিকে যাবে। এই সবকিছুই তাইওয়ানে চীনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে খুব বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে বিশ্বের ভূরাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন থেকে বলে আসছেন। কেউ কেউ তো সেটা আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে ঘটবে বলে বলেছেন।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে পৃথিবীর চিপ-সংকটকে যদি আমরা যোগ করি, তাহলে সেই সময়টা আরও এগিয়ে আসতেই পারে। তাইওয়ান চীনের সঙ্গে একীভূত হওয়ার অর্থ হচ্ছে স্বল্প এবং মধ্য মেয়াদে চিপ উৎপাদনে চীনের প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য। এতে চীন যেমন নিজের চাহিদা পরিপূর্ণভাবে মেটাতে পারবে, তেমনি পণ্যটির মাধ্যমে পৃথিবীর আরও বহু ক্ষেত্রে তার প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। আর আরেকটি স্ট্র্যাটেজিক পণ্য ‘রেয়ার আর্থ এলিমেন্টস’-এর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ তো তার হাতেই আছে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পৃথিবীর দুই স্ট্র্যাটেজিক পণ্যের উপর চীনের একচ্ছত্র অধিকার পশ্চিমা বিশ্ব কি মেনে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত?

ড. জাহেদ উর রহমান শিক্ষক ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
প্রথম আলো, ২৮ মে , ২০২১

=============================

জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন
দীর্ঘ সময় শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ
জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ শীর্ষ অবস্থানটি ধরে রেখেছে। গত বছরের আগস্ট থেকে এ ক্ষেত্রে এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৫ সালের পুরোটা সময় একই অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ২৮ মাসের মধ্যে ২০ মাস বাংলাদেশ ছিল শীর্ষে। অন্যান্য বছরও বাংলাদেশ প্রথম থেকে চতুর্থ স্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়।

আজ ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এ বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হচ্ছে।

পেশাগত দক্ষতা ও মানবিক আচরণের কারণে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ এক গর্বিত অংশীদার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা বাহিনীর মজ্জা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হাইতি থেকে পূর্ব তিমুর, লেবানন থেকে ডি আর কঙ্গো পর্যন্ত বিশ্বের সব সংঘাতপূর্ণ এলাকার জনমনে শ্রদ্ধার স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা। একসময় যেসব দেশের সাধারণ মানুষ ‘বাংলাদেশ’ নামটির সঙ্গে পরিচিত ছিল না, সেসব দেশে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে অতি প্রিয় একটি দেশ। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, রাজনৈতিক মতাদর্শ ও আঞ্চলিক বৈষম্যকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা নিজেদের উৎসর্গ করেছেন বিশ্বমানবতার সেবায়। পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, সততা ও মানবিক আচরণের কারণে তাঁরা আজ এসব দেশের মানুষের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছেন। কয়েকটি দেশে প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও রাস্তার নামকরণ হয়েছে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের নামে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ব্যাপক অবদান রেখেছেন দেশের এসব শান্তিরক্ষী।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় জীবনদানকারী ৪৪টি দেশের ১২৯ শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারসেল’ মেডেল প্রদান করেছে জাতিসংঘ। তাঁদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি রয়েছেন। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশই সর্বোচ্চ সংখ্যায় এই সম্মাননা পেল।  

শান্তি রক্ষা মিশনে অবদান রাখা দেশগুলোর অবস্থান সম্পর্কে জাতিসংঘের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পিসকিপিং অপারেশনস’ প্রতিবেদন অনুসারে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সেনা প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল সবার শীর্ষে। অন্য দেশগুলোর মধ্যে রুয়ান্ডা দ্বিতীয়, ইথিওপিয়া তৃতীয়, নেপাল চতুর্থ, ভারত পঞ্চম, পাকিস্তান ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। মিশনে এ পর্যন্ত বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ছয়জন ফোর্স কমান্ডার এবং সাতজন ডেপুটি ফোর্স কমান্ডারের দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন।

আইএসপিআরের তথ্যানুসারে ১৯৮৯ সালের ইরাক-ইরানে সামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে ১৫ জন বাংলাদেশির দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে অংশ নেওয়া শুরু হয়। এরপর গত প্রায় ৩২ বছরে এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৬৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ৪০ দেশে ৫৪টি মিশনে এ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের মধ্যে সেনাবাহিনীর এক লাখ ৪২ হাজার ৭৯০ জন, নৌবাহিনীর ছয় হাজার ১২ জন, বিমানবাহিনীর সাত হাজার ৫৫১ জন এবং পুলিশের ২০ হাজার ৩১৬ জন। এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

বর্তমানে বিশ্বের ৯টি সংকটাপন্ন দেশে এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মোট ছয় হাজার ৭৪২ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ৫০১ জন। অন্যরা সশস্ত্র বাহিনীর। বর্তমানে সর্বোচ্চসংখ্যক এক হাজার ৯১৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন ডি আর কঙ্গোতে। এ ছাড়া দক্ষিণ সুদানে এক হাজার ৬৭১ জন, মালিতে এক হাজার ৬৩৫ জন এবং কার-এ এক হাজার ৩৫৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজে এ পর্যন্ত জীবন দিয়েছেন ১৫৯ জন। আহত হয়েছেন ২৪০ জন। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন সেনাবাহিনীর ১২৪ জন, নৌবাহিনীর চারজন, বিমানবাহিনীর ৯ জন এবং পুলিশের ২২ জন।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংালাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণও ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ২৮৪ জন নারী জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর ১১৯ জন, নৌবাহিনীর পাঁচজন, বিমানবাহিনীর ১০ জন এবং পুলিশের ১৫০ জন। মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই সর্বপ্রথম ২০১০ সালে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে পুলিশের নারী দল পাঠায়। এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশন সম্পন্ন করেছেন বাংলাদেশের দুই হাজার ১৮৪ জন নারী। এর মধ্যে পুলিশের এক হাজার ৬২৩ জন এবং সশস্ত্র বাহিনীর ৫১৬ জন।

সম্প্রতি ঢাকায় সেনাবাহিনী আয়োজিত বহুজাতিক সেমিনার ‘আর্মি চিফস কনক্লেভ’-এ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেমিনারে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, অরাষ্ট্রীয় শক্তির উত্থান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, রাজনৈতিক সংকট এবং পরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের কারণে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা অপারেশন ক্রমেই চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল হয়ে পড়ছে।

অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে উদ্যোগ : জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে সম্প্রতি কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন আগে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অফিস অব মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স, ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশন (ডিপিও), চিফ অব স্টাফ হিসেবে মনোনীত হয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক।

আইএসপিআর বিষয়টিকে গত ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর প্রধানের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেলসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাতের ফল হিসেবে উল্লেখ করে জানায়, জাতিসংঘে মিলিটারি অবজারভার এবং স্টাফ অফিসার হিসেবে ২০টি অতিরিক্ত নিয়োগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। চলতি বছরের মধ্যেই জাতিসংঘে নারী শান্তিরক্ষীদের জনবল ১.৯১ থেকে ৮ শতাংশে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে যে ছয়জন জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের দায়িত্ব পালন করেছেন তার মধ্যে একজন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর। তিনি গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে আমাদের অংশ নেওয়ার কারণে বাংলাদেশ, বাঙালি এবং বাংলা ভাষা অনেক দেশে পরিচিত হয়েছে এবং মর্যাদা পেয়েছে। বাংলাদেশ যদি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত না হতো, তাহলে এই কৃতিত্ব অর্জন সম্ভব হতো না।’

তিনি আরো বলেন, ‘শান্তি রক্ষা মিশনে সাফল্যের মূলে রয়েছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর শৃঙ্খলা, দক্ষতা, দায়িত্ববোধ, মানবিক আচরণ এবং যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি।  পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও এ ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে।’  
//
কাজী হাফিজ  , ২৯ মে কালের কণ্ঠ

=============================

৪১তম বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি 
 সাইকস পিকো চুক্তি , কারণ,প্রভাব,পরিণতি 
"যদি আপনি ট্রাইগ্রিস নদীতে দুটি মাছকে মারামারি করতে দেখেন তবে জেনে রাখুন এর পেছনে বৃটিশদের হাত আছে।"
মধ্যপ্রাচ্য; প্রাচীন সভ্যতার সুতিকাগার। একসময়ের জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু। অথচ বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে যুদ্ধ-বিগ্রহ আর অশান্তি। স্বৈরশাসক, গৃহযুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদ- এগুলোকেই মনে হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর নিয়তি। তবে এটাই কি হওয়ার কথা ছিল? খুব সম্ভবত না। আজকের আরব বিশ্বের এহেন দুর্গতির জন্য অনেকেই দায়ী করেন ১৯১৬ সালে হয়ে যাওয়া এক চুক্তিকে, ইতিহাসে যেটি সাইকস-পিকো চুক্তি নামে পরিচিত।
গোপন এই চুক্তিটি হয় ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের মধ্যে। ব্রিটেনের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন স্যার মার্ক সাইকস এবং ফ্রান্সের পক্ষে ফ্রসোয়া জর্জ পিকো।
আরবদের কাছে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা বাস্তবে রূপ দেয়ার কোনো ইচ্ছেই ব্রিটিশদের ছিল না। তারা বরং একইসাথে তাদের অন্য মিত্রদের সাথে আলোচনা করতে থাকে।
মিত্রশক্তি তথা ফ্রান্স, রাশিয়া ও ব্রিটেন নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ পরবর্তী অটোমান সাম্রাজ্যের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। ১৯১৫ সালের নভেম্বর থেকে ১৯১৬ সালের মে পর্যন্ত তাদের মধ্যে এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক হয়। এই তিন পক্ষের মধ্যে ব্রিটেন ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী যারা আবার আরবদের সাথেও চুক্তি করেছিল!
১৯১৫ সালের ডিসেম্বর মাসের এক সকাল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বয়স তখনও ১৮ মাসের কম। মার্ক সাইকস নামক জনৈক ব্রিটিশ কুটনীতিবিদ লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিসে হাজির হন। তার হাতে ছিল মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র এবং মনে এই মানচিত্র কেমনভাবে কাটাছেড়া করা হবে সেই পরিকল্পনা!
কথিত আছে, দেশের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের সামনে দাঁড়িয়ে স্যার মার্ক সাইকস মানচিত্রের মধ্যে নিজের আঙুল দিয়ে এক দাগ টানেন এবং বলেন, “আমি মরুভূমির মধ্যে একটি লাইন টানতে চাই। এমন একটি লাইন যার বিস্তৃতি হবে 'Acre' এর 'e' থেকে (তখনকার ফিলিস্তিন) 'kirkurk' এর 'k' পর্যন্ত (বর্তমানে যা ইরাকের মধ্যে)!"
তখন কে জানত এরকম একটি লাইন টেনে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের হাজার হাজার মানুষের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলা যায়!
 মার্ক সাইকস তার পরিকল্পনায় জানান, ব্রিটিশরা এই লাইনের দক্ষিণ দিক এবং ফরাসিরা এর উত্তর দিক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে।
অনেক আলোচনা পেরিয়ে ১৯১৬ সালের ১৬ মে ব্রিটেনের মার্ক সাইকস ও ফ্রান্সের ফ্রসোয়া পিকোর মধ্যে গোপন এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই সাজনভ এই চুক্তি অনুমোদন করেন।
যা ছিল সাইকস-পিকো চুক্তিতে
প্রথম অংশটি বাগদাদ থেকে দক্ষিণে কুয়েত পর্যন্ত। এই অংশটি সরাসরি ব্রিটিশদের অধীনে থাকবে।
দ্বিতীয় অংশটুকু থাকবে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে। বর্তমান উত্তর ইরাক, জর্দান ও বর্তমান ইসরাইলের নেগেভ মরুভূমি থেকে মিসরের সিনাই উপত্যকা পর্যন্ত এই অংশের বিস্তৃতি।
তৃতীয় অংশটি যা দক্ষিণ লেবানন থেকে তুরস্কের কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত থাকবে সরাসরি ফ্রান্সের অধীনে।
সিরিয়া মরুভূমির অংশটি যাবে ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রণে।
এই অংশটি ঐতিহাসিক জেরুজালেম এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে। এর সর্বধর্মীয় গুরুত্ব থাকার কারণে এটি থাকবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিয়ন্ত্রণে।
সাইকস-পিকো চুক্তিতে রাশিয়ার জারকে দেয়া হয় ইস্তাম্বুল, বসফরাস প্রণালীসহ বর্তমান তুরস্কের অনেকটুকু।
চুক্তির প্রভাবঃ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়েয় মাধ্যমে পতন হয় অটোমান সাম্রাজ্যের। হুবহু সাইকস-পিকো চুক্তির মাধ্যমে পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র ঠিক না করলেও এর প্রভাব রয়ে যায়। এই চুক্তিকে ভিত্তি ধরেই  ১৯২০ সালের সান রেমো কনফারেন্সে প্রস্তাবিত ম্যান্ডেট পদ্ধতির মাধ্যমে আরব বিশ্বকে ভাগ করা হয়।
প্রথমত সাইকস-পিকো এবং পরবর্তী অন্য কোনো চুক্তিতেই আরব বিশ্বের মতামতকে গ্রহণ করেনি ব্রিটেন ও ফ্রান্স। বরং তারা নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বিবেচনা করেনি আরবদের স্বার্থ। ঔপনিবেশিক ব্রিটেন ও ফ্রান্স সীমান্ত নির্ধারণ করার সময়ে এ অঞ্চলের জাতিগত, ভাষাগত ও ধর্মীয় পার্থক্য বিবেচনা করেনি, যার ফলশ্রুতিতে একই কুর্দি জাতি বিভিন্ন দেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আবার শিয়া-সুন্নিসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত পার্থক্য থাকলেও তৈরি হয় এদের নিয়েই কোনো কোনো দেশ।
ব্যালফুর ঘোষণা
মজার ব্যাপার হচ্ছে, ব্রিটেন একইসাথে শুধু আরব এবং ফ্রান্সের সাথেই চুক্তি করেনি, বরং ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র গড়ার ব্যাপারে জায়নিস্টদের প্রতিশ্রুতি দেয়! তখনকার ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার ব্যালফুর জায়নিস্ট আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা লর্ড ওয়াল্টার রথসচাইল্ডের কাছে লেখা এক চিঠিতে এই প্রতিশ্রুতি দেন। ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর লেখা এই চিঠি পরবর্তীতে ‘ব্যালফুর ডিক্লারেশন’ নামে পরিচিতি পায় যা ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
///
হিরাত উদ্দীন ( পরিমার্জিত লেখা,রোর বাংলা)

=============================

বিসিএস লিখিত + ভাইভা
ভূ-রাজনীতি 
দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের নতুন কূটনৈতিক কৌশল

যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতকে নিয়ে গঠিত কোয়াডের বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ঢাকা কোয়াডে যোগ দিলে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষতি হবে। তাঁর এমন মন্তব্য উপমহাদেশে ভূরাজনীতিতে নতুন এক চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত দিয়েছে। যার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলে চীনের বন্ধু কিংবা শত্রু—সবাই দোরগোড়ায় আগ্রাসী বিশ্বশক্তির উপস্থিতি উপলব্ধি করতে শুরু করেছে।

হঠাৎ কেন চীনা রাষ্ট্রদূত ঢাকার প্রতি এমন কড়া ভাষায় বার্তা দিলেন? এ প্রশ্ন অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। যেখানে কোয়াডের পক্ষ থেকে সদস্য বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনার কথা আপাতত জানা যায়নি, সেই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় কূটনৈতিক সাংবাদিকদের এক অনলাইন আয়োজনে চীনা দূতের কড়া ভাষার মন্তব্য বাংলাদেশসহ অনেককেই অবাক করেছে। তবে এর মধ্য দিয়ে চীনের নয়া কূটনৈতিক স্টাইল বা ধরনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে, সেটা স্পষ্ট।

চীন সাধারণত তাদের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার বিষয়ে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকে। কিংবা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কোনো পক্ষ ভূমিকা রাখলে, হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করলে চীনের জবাব বেশ রূঢ় হয়। তবে দেশটির এমন কঠোর অবস্থান, রূঢ় ভাষা ইদানীং নিজ সীমানা ছাড়িয়ে অন্য দেশগুলোর প্রতিও দেখা যাচ্ছে। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ কোয়াড নিয়ে বাংলাদেশের প্রতি সতর্কবার্তা।

সত্তরের দশকের শেষের দিকে যখন দেং জিয়াওপিং চীনে অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু করেন, ধীরে ধীরে অর্থনীতি উন্মুক্ত করতে থাকেন, তখন থেকে দেশটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় জোর দিতে শুরু করেছিল। ওই সময় থেকে বেইজিংয়ের কূটনীতির অন্যতম লক্ষ্য ছিল বন্ধুত্বের বিস্তার। বন্ধুর মন জয় করা এবং মানুষের মধ্যে প্রভাব বাড়ানো। তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের হাত ধরে চীনা কূটনীতিকেরা বেইজিংয়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়, এমন কিংবা সাম্প্রতিক কোনো বৈশ্বিক ইস্যুতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট পেয়েছেন।

দেং জিয়াওপিংয়ের ওই তুলনামূলক কোমল কূটনীতি থেকে সরে এসে সি চিন পিংয়ের বর্তমান চীনা প্রশাসন একুশ শতকে ‘উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লোমেসি’ এগিয়ে নিচ্ছে। এ কূটনৈতিক ধারার অন্যতম একক হলো, স্বার্থ ক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখলেই প্রকাশ্যে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানানো। এর আগে ভারত সরকারও চীনের পক্ষ থেকে রূঢ় প্রতিক্রিয়া শুনেছে। বিশেষত দোকলাম ও লাদাখে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘাতে বেইজিং এ কূটনৈতিক কৌশলের প্রয়োগ করেছে। ওই সময় চীনা সরকারি গণমাধ্যম নতুন ও সৃজনশীল উপায়ে ভারতের সমালোচনায় মেতেছিল।

তবে দিল্লির এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকলেও উপমহাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর তা ছিল না। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো বেইজিংয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলেছে, চলছে। এখন তারাও বেইজিংয়ের এমন রূঢ় কূটনৈতিক আচরণের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করেছে। লি জিমিং নিশ্চিত জানতেন, কোয়াড বাংলাদেশকে জোটের সদস্য হতে আমন্ত্রণ জানায়নি। কেননা, চীন সরকার এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো নীতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে। কাজেই কোয়াডের কার্যক্রম বেইজিংয়ের নিয়মিত নজরদারিতে থাকার কথা। এরপরও কড়া ভাষায় সতর্ক করার মধ্য দিয়ে চীনা রাষ্ট্রদূত কোয়াড নিয়ে ঢাকার সামনে একটি সীমারেখা (রেড লাইন) টেনে দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ের ঈর্ষনীয় অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং বঙ্গোপসাগর ঘিরে কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের প্রতি চীনের সচেতন নজর রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক সংযুক্তি, ক্রমবিকাশমান কৌশলগত সহযোগিতামূলক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক চীন পর্যবেক্ষণে রেখেছে। এমনকি ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটন ও টোকিওর সহযোগিতা বৃদ্ধির মনোভাব চীনের দৃষ্টি এড়ায়নি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও চীনের উচ্চাভিলাষী বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের দুয়ার খুলে রেখেছে ঢাকা।

কোয়াডে অংশ নেওয়া নিয়ে লি জিমিংয়ের মন্তব্য ভবিষ্যতে ইন্দো-প্যাসিফিক সহযোগিতার পথে পা বাড়াতে বাংলাদেশকে নতুন করে ভাবাবে। এমন আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা চীনের কৌশলগত কূটনীতির অন্যতম অংশ। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে। ওই সময় বঙ্গোপসাগরে চার দেশের (যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর) উদ্যোগে মালাবার মহড়ার বার্ষিক আসর বসেছিল। নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু হওয়া এই মহড়ায় ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো যুক্ত হয় ভারত। ওই মহড়াকে ‘এশিয়ান ন্যাটো’ গঠনের সূচনা বলে আগাম মন্তব্য করেছিল চীনের গণমাধ্যম।

কূটনৈতিক চ্যানেলে সংশ্লিষ্ট পাঁচটি দেশের কাছে ওই সামরিক মহড়া নিয়ে নিজেদের আপত্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল বেইজিং। ভারতে চীন–সমর্থিত বাম দলগুলো বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। চাপের মুখে তখনকার ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি অন্য দেশের সঙ্গে বহুপক্ষীয় সামরিক মহড়া সাময়িক বাতিল করার পথে হেঁটেছিলেন।
চীনের আপত্তি ভারতের রাজনৈতিক ও সামরিক নীতিতে প্রভাব ফেলে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরের পরবর্তী সময়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করে দিল্লি। মালাবার মহড়া অনেকটা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে চলে যায়। যদিও মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালে জাপান ও ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করে ভারত।

রাষ্ট্রদূত লির বক্তব্যে বেইজিংয়ের মনের কথাই প্রকাশ পেয়েছে। সেটা হলো, কোয়াড একটি ক্ষুদ্র ভূরাজনৈতিক জোট এবং এ জোট চীনকে আলাদা রেখে এশিয়ায় বিভক্তি আনতে চায়। এ কারণে কোয়াডের সঙ্গে যেকোনো ধরনের সম্পৃক্ততা চীন ভালো চোখে দেখে না। এমন তৎপরতা প্রতিরোধ করাকে সর্বোচ্চ কৌশলগত অগ্রাধিকার দেয় বেইজিং।

এখন প্রশ্ন হলো, সি চিন পিংয়ের এমন আগ্রাসী কূটনীতি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কী অর্থ বহন করছে? উপমহাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও কূটনীতিতে দুটো বড় পক্ষ চীন ও ভারত। প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি ভারত অনেকটাই রাখঢাক রেখে কর্তৃত্বপূর্ণ আচরণ করে। ঐতিহাসিকভাবে ভারত এ নীতি বাস্তবায়ন করে আসছে। তবে এ অঞ্চলে চীনা কূটনীতির কৌশল পর্দার বাইরে আসতে শুরু করেছে, যা তুলনামূলক নতুন পরাশক্তি হিসেবে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক স্বার্থ রক্ষায় চীনকে অনেকটাই এগিয়ে দেবে।

দিল্লি বরাবর দক্ষিণ এশিয়ায় বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মধ্যস্থতা করে—আঞ্চলিক অভিজাতদের মধ্যে এমন একধরনের চাপা ক্ষোভ রয়েছে। এর বিপরীতে চীনের হস্তক্ষেপবিরোধী মনোভাব তুলনামূলক ভালো বিকল্প হিসেবে দেখতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। তবে ঢাকার প্রতি চীনের সাম্প্রতিক সতর্কবার্তা তাঁদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে। আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে চীনের কৌশলগত কূটনীতি এ অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি কত দিন ধরে রাখবে, সেটাও ভাবার বিষয়।

ভারতের প্রতিবেশীদের একটি সাধারণ অভিযোগ রয়েছে—অর্থনৈতিক প্রকল্প এগিয়ে নিতে দিল্লির সক্ষমতা সীমিত। এ ক্ষেত্রে চীনের সম্পৃক্ততা তুলনামূলক দ্রুত ও কার্যকর। তবে এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনা সহযোগিতা শর্তহীন নয়। অনেক সময়ই শর্তের বেড়াজাল সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর স্বার্থের বিপরীতে যায়। তবে দক্ষিণ এশিয়ার অভিজাতদের জন্য ভারতের রাজনৈতিক মহলে প্রবেশের অনেক বিকল্প রাস্তা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবেশীদের নিয়ে দিল্লির মনোভাব ও নীতির ধরন বোঝা অনেকটা সহজ হয়। এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো অচিরেই বুঝতে পারবে, সি চিন পিংয়ের আমলে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা তাদের জন্য সেই সুযোগ রাখেনি।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো দীর্ঘদিন থেকে চীনকে মূলত আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারতের প্রভাবে ভারসাম্য আনতে দেখেছে। দিল্লির বিপরীতে কার্যত বিনা মূল্যে সহায়তার ডালা নিয়ে হাজির হয়েছে বেইজিং। এখন যদি চীন এ অঞ্চলে আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়ন করতে শুরু করে, তবে বেইজিংয়ের ওপর ভরসা করার আরও দৃশ্যমান মূল্য দিতে হতে পারে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে।

ভারত কিংবা চীনের সঙ্গে শক্তিশালী মিত্রতার পরও দক্ষিণ এশিয়ার ছোট দেশগুলোকে নিজ প্রভাবে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া দর–কষাকষি বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক বিতর্ক এটা মনে করিয়ে দিয়েছে যে এ প্রক্রিয়াকে খুব একটা সহজ হতে দেবে না বেইজিং। বিষয়টি এই অঞ্চলের দেশগুলোকে নিজেদের মতো করে নতুনভাবে ভাবার খোরাক জুগিয়েছে।

* সি রাজা মোহন: ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক এবং কন্ট্রিবিউটিং এডিটর অন ফরেন অ্যাফেয়ার্স, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

সংক্ষেপিত অনুবাদ: অনিন্দ্য সাইমুম।
প্রথমআলো ২২,মে

=============================

বিসিএস লিখিত + ভাইভা
কোয়াড : ভূরাজনীতির নতুন  সমীকরণ 

অক্টোবর ২০২০, বিশ্ব একদিকে মহামারী করোনার ছোবলে দিশেহারা, অন্যদিকে বিশ্ব রাজনীতির চার বৃহৎ আঞ্চলিক শক্তিঃ যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান, জাপানের রাজধানী টোকিওতে গোপন বৈঠকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের আগত রাজনৈতিক সমীকরণের ছক আঁকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। এই আলোচনাকে চারদেশীয় নিরাপত্তা সংলাপ (Quadrilateral Security Dialogue) বা Quad বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সংলাপে, এই চারটি রাষ্ট্রই একটি সাধারণ প্লাটফর্ম গঠনে জোটবদ্ধ হওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছেন, যাতে রাষ্ট্রগুলো এই অঞ্চলে তাদের স্বাধীন ও নিরাপদ সমুদ্র যাত্রা নিশ্চিত করতে পারেন- এবং ইন্দো-প্যাসিফিক রাষ্ট্রগুলোতে গণতন্ত্র চর্চা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। কিন্তু বিভিন্ন স্ক্লাররা বলেন, এই তথাকথিত নিরাপত্তা সংলাপের মূলে রয়েছে এই অঞ্চলে চীনের ক্রমাগত প্রভাব বিস্তার, অর্থনৈতিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রে। চীনের এই উত্থান, এই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থে নানাভাবে আঘাত করছে, বিশেষত আঞ্চলিক নিরাপত্তায়। যাইহোক, আমাদের আলোচনায় আমরা Quad সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব, বিশেষত এই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো এই নিরাপত্তা সহযোগিতাকে কিভাবে ব্যাক্ষা করছেন এবং Quad কে নিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কেমন?   

Quad এর সূচনাও হয়েছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের তলদেশে মারাত্মক ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের ফলে এক ধ্বাংসাত্মক সুনামি আঘাত হানে, ফলে ইন্দো-প্যাসিফেকের উপকুলবর্তী দেশগুলোর অবকাঠামো ও জানমালের প্রচণ্ড ক্ষতি সম্মুখীন হয়। এই দূর্যোগ প্রশমনে ত্রাণ সহায়তা দিতে এই ৪টি দেশের নৌবাহিনী সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তারা নিজেদের মধ্যকার যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সামুদ্রিক সহযোগিতা (Maritime Co-operation) এর উপর বেশি জোর দেন। ফলে ২০০৭ সালে, কিভাবে চীনের প্রভাবকে প্রশমিত করা যায় তার উপর ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলো সংলাপ হয় । কিন্তু সমন্বয়ের অভাবে এই আলোচনাগুলোর কোন কার্যকারি ফলাফল বা সফলতা মুখ দেখে নি।     

২০১৭ সালে পুনুরায় চেষ্টা করা হয় এই প্লাটফর্মটাকে কার্যকর করতে। উল্লেখ্য, যদিও এই দীর্ঘসময়ে সরকারিভাবে Quad এর কার্যকারিতার ব্যপারে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, তবুও একাডেমিক লেভেলে অনেক গবেষণা করা হয়েছে এই নিরাপত্তা জোটের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়ে। ২০১৭ সালের আলোচনায় সরাসরি চীনের উত্থানে Quad এর অংশীদাররা যেভাবে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের দৌড়ে পিছয়ে পরছে তাকে ইংগিত করা হয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হল, এই চারটি রাষ্ট্র অনেকাংশে চীনের সাপ্লাই চেইনের উপর নির্ভরশীল, বিশেষত জাপান ও ভারত, এবং চীন তাদের ক্ষেত্রে প্রথম বা দ্বিতীয় সর্ব বৃহৎ বানিজ্যিক অংশীদার। তাই, এই রাষ্ট্রগুলো, যুক্তরাষ্ট্র বাদে, চীনকে রাগানোর সাহস তেমন দেখাতে চাচ্ছেনা। 

অন্যদিকে, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের চিন্তার বিষয়টি হল চীনের এই উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলের দীর্ঘদিনের যে একচ্ছত্র প্রভাবটা ছিল তা অনেকাংশে কমিয়ে দিতে পারে। এশিয়ার রাষ্ট্রগুলো অনেক আগে থেকেই এই ভীতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাওয়া তাদের স্বার্থের ক্ষেত্রে কিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই ভীতিটা বাস্তবে রূপ নেয় যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসে “America First” স্লোগান নিয়ে পাশাপাশি ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (TPP) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয় ট্রাম্প। এই সুযোগটাই মূলত চীনের রাষ্ট্রপতি সি জিং পিং ব্যবহার করেছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধিতে।  

২০১৭ পরবর্তী আলোচনায় রাষ্ট্রগুলো বারংবারই Quad এর ব্যবহারিক দিকটাকে বেশি জোর দিয়েছেন। যেমনঃ ২০২০ এর অক্টোবরে যে সংলাপটি হল সেখানে এই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলো ভারত মহাসাগরে একটি সমন্বিত নৌ-মোহরার মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার বিশ্বাসের জায়গাকে আরো দৃঢ় করার প্রস্তাব রাখেন এবং নভেম্বরে সেই মোহড়াটি পরিচালিত হয়। এই মহড়ায় এই ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ মহাসাগরে চীনের সাবমেরিনগুলোকে নজরবন্দি করে রাখার ক্ষেত্রে সকল ধরনের টেকনিকাল ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ব্যপারে বেশি জোর দেয়া হয়েছে, এবং আমরা দেখেছি এই মহড়াকে কেন্দ্র করে চীনকে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে। এই মহড়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটা হল এখানে একটা শক্ত প্লাটফর্ম সৃষ্টি হয়, ফলে এই চারটি রাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক আকারে সহযোগিতা মূলক সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে পারস্পারিক শক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। 

Quad ও জাপানঃ 

২০১৭ পরবর্তী Quad ধারণাটিকে বাস্তবে রূপায়িত করতে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা রেখেছেন জাপান ও জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক উত্থান চীনের নিকট প্রতিবেশি জাপানের জন্য সবচেয়ে বেশি স্বার্থ-বিরোধী হয়ে উঠছিল। দক্ষিন চীন সাগরের সাথে ভারত মহাসাগরকে সংযুক্ত করার যে কৌশল জাপানের ছিল সেক্ষেত্রে একমাত্র ও বৃহৎ বাঁধাই ছিল চীন। জাপান অনেক আগে থেকেই এই অঞ্চলে একটি নতুন অর্ডার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে আসছে যেখানে থাকবে না চীনের কোন অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ও স্ট্রাটেজিক প্রভাব।  

দীর্ঘদিন ধরে জাপা্ন ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে নিরাপত্তা টাই জোরদার করতে খুব প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গত এক দশক ধরে জাপান অস্ট্রেলিয়ার সাথে তার প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে আরো জোরদার করেছে। Reciprocal Access Agreement এর মাধ্যমে তারা প্যাসিফিক অঞ্চলে সমন্বিত সামরিক মহড়া ও দূর্যোগ প্রশমন কার্যক্রম পরিচালিত করছে। এছাড়াও, সামরিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ, ও প্রতিরক্ষার সরঞ্জাম বিনিময়ের ক্ষেত্র প্রসারের স্বার্থে জাপান- ভারতের সাথে Acquisition and Cross-servicing Agreement স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি গুলোর মাধ্যমে জাপান এই দুইটি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ককে আরো বৃহৎ ও মার্জিত আকারে পরিচালিত করেন। 

জাপান বরাবরই দক্ষিন কোরিয়াকে এই প্লাটফর্ম- অর্থাৎ কোয়াড থেকে দূরে রাখতে চেয়েছে। কারণ, দক্ষিণ কোরিয়া সবসময়ই যুক্তরাষ্ট, জাপান ও দঃ কোরিয়া বিষয়ক যেকোন নীতিতে সহজে মত পরিবর্তন করে ফেলে। ফলে প্রস্তাবনাটির ভবিষ্যৎ সবসময়ই সংকীর্ণ হয়ে পরে। এর জন্যই জাপান কোয়াডকে একটি উপযুক্ত প্লাটফর্ম হিসেবে গ্রহণ করেছে যার মাধ্যমে জাপান তার নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে পারে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপর তার সামরিক নিরাপত্তার নির্ভরশীলতাও কমাতে পারে।

Quad ও অস্ট্রেলিয়াঃ 

Quad এ অস্ট্রেলিয়ার আচারণ কিন্তু জাপানের মত এত ইতিবাচক না- অর্থাৎ প্রো-কোয়াড না। বিশেষত ২০০৭ সালের মালাবার নৌ মহড়ার পর থেকেই অস্ট্রেলিয়া চীনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার সিদ্বান্ত নিয়ে অনেক সাবধানতা অবলম্বন করছে। ফলফল স্বরূপ পরবর্তী বছরের যে বাৎসরিক নৌ মহড়া সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়া নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসে। অস্ট্রেলিয়া কোন ভাবেই অস্ট্রেলিয়া- চীনের যে বহুমুখী সম্পর্কের ক্ষেত্র সেখানে কোন ভাটা সৃষ্টি করতে চায় নি। কিন্তু সম্প্রতি কোভিডের বিকাশ এবং এর পিছনে চীনের নেতিবাচক/রহস্যময় ভূমিকা উভয়ের সম্পর্কে অনেকটা টানাপোড়ন তৈরি করেছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন বিষয়ে চীনের নাকগলানো, চীনের অর্থনৈতিক পেশি শক্তির প্রেশার ও অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতার পরিবর্তন চীনের ব্যপারে নতুন কৌশল গ্রহনে অস্ট্রেলিয়াকে সহায়তা করছে। ফলে, ২০২০ সালে মালাবার নৌ-মহড়ায় আবারো অংশ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, পাশাপাশি নিজেদের প্রতিরক্ষা ক্ষাতে বাজেট বাড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া এবং সর্বপোরি আঞ্চলিক সহযোগিতাকে জোরদারে মননিবেশ করছে। 

নতুন করে Quad এ অংশ নেওয়ার ফলে অস্ট্রেলিয়া তার অপর সহযোগী রাষ্ট্র- যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের সাথে তার পূর্ববর্তী দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক নিরাপত্তা সম্বন্ধগুলোকে আরো জোরদার করার সুযোগ পাচ্ছে। যেমনঃঃ অস্ট্রেলিয়া ২০০৭ সালের নৌ মহড়ার পরে জাপানের সাথে “Joint Declaration on Security Co-operation, 2007”, “A Comprehensive Partnership 2008”, এবং “Special Strategic Partnership, 2014” শিরোনামে তিনটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। অন্যদিকে, ২০২০ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাতের সময় অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোরিসন “Mutual Logistics Sharing Agreement” স্বাক্ষর করেছেন, এবং চুক্তির মাধ্যমে এই দুই রাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্ট্রাটেজিক অংশীদারিত্ব বা পার্টনারশীপে রূপান্তর করার প্রতিশ্রুতি করেছেন। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, এই বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ককে চালু রাখতে কোয়াড অন্যতম শক্ত ও কার্যকারি প্লাটফর্ম হতে পারে। 

Quad ও ভারতঃ 

ভারত দীর্ঘদিন যাবত তার বৈদেশিক নীতিতে নিরপেক্ষ নীতি বা Nonalignment policy বজায় রাখলেও, সময়ের সাথে সাথে সে প্রতিরক্ষা ও ভূ-কৌশল্গত দিক থেকে আঞ্চলিক মহাশক্তি হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। বিশেষত ভারত মহাসাগরকে নিয়ে ভারতের এক আলাদা পরিকল্পনা বা উৎকণ্ঠা ঐতিহাসিকভাবেই বিরাজমান রয়েছে। কিন্তু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে সে যতটা না চীনের প্রভাবকে প্রশমন করতে যুকছে, তার চেয়ে বেশি জরুরী হয়ে পরেছে এই অঞ্চল ঘিরে অন্য বৃহৎ শক্তিগুলোর সাথে  অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে তার সম্পর্ক উন্নয়ন। উল্লেখ্য, Quad এর অন্য সকল রাষ্ট্র না হলেও, চীনের সাথে ভারতের রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত ও ঐতিহাসিক সীমান্ত সংঘর্ষ। পাশাপাশি, ভারত ঐতিহাসিকভাবে পরাশক্তিদের বলয়ের বাইরে থেকে সবসময়ই স্বতন্ত্র সিদ্বান্ত নেয়ার চেষ্টা করে আসছে। এছাড়াও, দক্ষিন এশিয়ার ব্যপারে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ব্যাপারে ভারত সবসময়ই ছিল সন্দেহপ্রবন, এবং ভারতীয় গবেষকরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন, এই কুয়াডে ভারতকে সবচেয়ে দুর্বল অংশী হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং ভারত গুরুত্বও কম পাচ্ছে। ফলে ভারত অস্ট্রেলিয়ার মতন নৌ-মহড়া দীর্ঘদিন প্রত্যাক্ষান করেছে এবং আঞ্চলিক শক্তি চীনের সাথে সু-সম্পর্ক করার চেষ্টা করেছে লুক-ইস্ট নীতির মাধ্যমে। 

চীনের সাথে ভারতের সম্পর্ক মোটামুটি ভালই চলছিল, কিন্তু ২০২০ সালে লাদাখের অমিমাংসিত্ ম্যাকমোহন লাইন নিয়ে আবারো উভয়ের সীমান্ত রেষারেষি শুরু হয়, এবং পরিস্থিতি অনেক ঘোলাটে হয়ে আসে। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চেয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি নিজেকে একজন গ্লোবাল লিডার হিসেবে প্রকাশ করতে চান সবসময়। মোদি সংঘাতকে পুজি করে অন্যান্য চীন বিরোধী শক্তির সাথে সম্পর্ক জোরদারের প্রচেষ্টা চালান। এদিকে, ভারত চীনের প্রস্তাবিত বেল্ট রোড প্রস্তাবণাকে নাকচ করে দেন এবং তার প্রতিবেশিদেরকেও একই পথে হাটতে প্রেশার দিতে থাকেন। পাশাপাশি, এশিয়াকে কেন্দ্র করে চীনের যে এক নতুন অর্ডার প্রতিষ্ঠার চিন্তা তাকেও ভারত নিজের স্বার্থ বিরোধী বলে অবহিত করছে অনেকবার।  

যাইহোক, সাম্প্রতিক সময়ে, ভারতের সাথে জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারিত্ব অনেকাংশে বেড়েছে, তা আপনি শিনজো আবের ভারতের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে বক্তৃতা দেয়া, ডোনাল্ড ট্রাম্পের হিন্দি লেকচার শোনা থেকে শুরু করে বাইডেনের কোয়াড গঠনের মাধ্যমে উভয়ের সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি প্রস্তাবণা থেকে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারত শক্তিশালী হেলিকাপ্টার থেকে শুরু করে সাবমেরিক ধ্বংসের সরঞ্জামও সংগ্রহ করছে। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের সাথে ভারতের বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক সামরিক চুক্তির কথা উপরে তো উল্লেখ করেছিই। 

উল্লেখ্য, যেহেতু ভারতের সাথে চীনের সমুদ্রসীমা বা সামুদ্রিক নেভিগেশন নিয়েও কোনরূপ দ্বন্দ্ব নেই, এবং Quad যেহেতু একটি নৌ- সামরিক জোট, তাই ভারত নিজেকে কোয়াড প্লাটফর্মে রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন আত্মজিজ্ঞাসার উত্তর খুজছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলেও, বিরোধী দল এবং স্কলারদের মধ্যে কোয়াডের আসল উদ্দেশ্য এবং এখানে যুক্ত হলে ভারতের আঞ্চলিক স্ট্রাটেজিতে কিরূপ প্রভাব পরতে পারে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে।
//
সংগৃহীত

=============================

৪১তম বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি 

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশের অর্থনীতি

অর্থনীতির অগ্রযাত্রায় সমাজব্যবস্থার শুরু থেকেই মানুষ তার জীবনকে সুখী-সমৃদ্ধ ও স্বাচ্ছন্দময় করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মানুষের অব্যাহত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মানব সভ্যতা আজ উৎকর্ষের চরম শিখরে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে।শিল্প অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একের পর এক বিপ্লব মানব সভ্যতাকে একটি স্তর থেকে অন্য স্তরে উন্নীত করেছে। এ পর্যন্ত বিশ্ব তিনটি শিল্পবিপ্লব অবলােকন করতে পেরেছে। 

সভ্যতার ইতিহাসে প্রতিটি বিপ্লব অর্থনৈতিক বিষয়ে, সামাজিক বিষয়ে ও রাজনৈতিক বিষয়ে আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের পর বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের দিকে ক্রমশ ধাবমান।চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে বিশ্বব্যাপী চলছে নানা আলোচনা, গবেষণা ও জল্পনা-কল্পনা।

শিল্পবিপ্লব: 
শিল্পবিপ্লব হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন। এর মাধ্যমে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ উন্মোচিত হয়। ১৭৮৪ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে ইংল্যান্ডে প্রথম শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়। প্রথম শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে ইংল্যান্ড তথা তামাম বিশ্বে উৎপাদন ব্যবস্থায় ও বিশ্ব শিল্প অর্থনীতির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন চলে আসে। মূলত ১৭৫০ থেকে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী এ বিপ্লব কৃষি উৎপাদন সংক্রান্ত, কৃষি অর্থনৈতিক। এরপর বাণিজ্যিক ব্যবস্থা  আধুনিক শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে যায়। 

দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লবের পরিধি ছিল প্রথম বিপ্লবের তুলনায় ব্যাপক। ১৮৭০ সালে বিদ্যুতের আবিষ্কার শিল্প। উৎপাদনে এক নতুন গতির সঞ্চার করে। ফলে উৎপাদন ব্যবস্থায় শিল্প। কারখানাগুলাে তড়িৎ ও অ্যাসেম্বলি লাইনের মাধ্যমে ব্যাপক উৎপাদনের । সক্ষমতা অর্জন করে। দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লবের । ব্যাপ্তি ছিল উনিশ শতকের শেষার্ধ থেকে বিশ শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত। মানব সভ্যতার ইতিহাসে তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের সূচনা ঘটে ১৯৬০ এর দশকে। তৃতীয় শিল্পবিপ্লবকে কম্পিউটার বিপ্লবও বলা হয়। সেমিকন্ডাক্টর, মেইনফ্রেম কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এ বিপ্লবের ধারক ও বাহক। ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কার তৃতীয় শিল্পবিপ্লবকে চূড়ান্ত গতি দান করে। তৃতীয় শিল্পবিপ্লব বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে। ফলে উৎপাদন ব্যবস্থায় । অভাবনীয় উন্নতি সাধিত হয়। তবে এ । তিন বিপ্লবকে ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে । চতুর্থ শিল্পবিপ্লব।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব: 
সময় এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের। এ শিল্পবিপ্লবের ভিত্তি হলাে প্রযুক্তি। ক্ষুদ্র ও শক্তিশালী সস্তা সেন্সর, মােবাইল, ইন্টারনেট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা  মেশিন লার্নিং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ভরশক্তি। এ বিপ্লবে মেশিনকে বুদ্ধিমান করে তৈরি । করা হচ্ছে। মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং, রােবটিক্স, অটোমেশন, ইন্টারনেট। অব থিংস, ব্লকচেইন প্রযুক্তি, থ্রিডি প্রিন্টিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, জিন প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ইত্যাদির সমন্বয়ে আজকের বিশ্বে । আমরা যে পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি তাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। অনেকে এটাকে ডিজিটাল বিপ্লব কিংবা ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ হিসেবেও। আখ্যায়িত করেন। World Economic  Forum (WEF)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী প্রধান ক্লাউস শােয়াব তার 'The Fourth Industrial Revolution 2103 TONA, আমরা চাই বা না-চাই বিশ্ব ক্রমশ পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে চলছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যােগাযােগ, নিরাপত্তা, গবেষণা সবক্ষেত্রেই চতুর্থ। বিপ্লবের সুদৃঢ় প্রসারী প্রভাব থাকবে।

শােয়াব ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের আগাম ফসল হিসেবে  ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ১০ শতাংশ । মানুষের পরিধেয় বস্ত্রের সাথে সংযুক্ত।থাকবে ইন্টারনেট, ১০ শতাংশ মানুষের । চশমার সাথেও ইন্টারনেট সংযুক্ত থাকবে, পাওয়া যাবে মানুষের শরীরে। স্থাপনযােগ্য মােবাইল ফোন, ৯০ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করবে, আমেরিকায় ১০% গাড়ি হবে  চালকবিহীন, ৩০ শতাংশ কর্পোরেট । প্রতিষ্ঠানের অডিট হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন অডিটর দিয়ে, এমনকি কোম্পানির বাের্ডের একজন পরিচালক । হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রােবট। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বদলে দিতে যাচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষের জীবন যাপন প্রণালী। 

সারা বিশ্বে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে প্রচুর আলােচনা এবং গবেষণা হচ্ছে। আজ বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকেও প্রস্তুতি নিতে হবে। ভবিষ্যতের এ চ্যালেঞ্জ মােকাবেলার। জন্যে এবং ভবিষ্যত বিশ্বের একটি উন্নত ও অগ্রগামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ার ক্ষেত্রে বহুমুখী সম্ভাবনার ক্ষেত্র। যেমন অবারিত-উন্মুক্ত, ঠিক তেমনি এ চ্যালেঞ্জের সমস্যার দিকগুলােকেও বিবেচনায় নিতে হবে।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে সম্ভাবনা: 

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা ভােগ করতে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষায় বাংলাদেশ যত এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশের অগ্রগতি তত ত্বরান্বিত হবে। এ শিল্পবিপ্লবের সময়কালে রােবটিক্স, ক্লাউড টেকনােলজি, ব্লকচেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং, ন্যানােটেকনােলজি এবং বায়ােটেকনােলজি প্রভৃতি বিষয়গুলাে অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে। তাই বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে আরও দক্ষ করে গড়ে তুলে এ তরুণ সমাজকে মানব মূলধনে রূপান্তর করতে হবে। 

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে চাকরিমুখী না করে ডিজিটাল প্রযুক্তিগত শিক্ষার মাধ্যমে। উদ্যোক্তামুখী করার কর্মকৌশল ও পরিবেশ সৃষ্টি করে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মডেল হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। দেশের বিভিন্ন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে। দেশি-বিদেশি বিনিয়ােগকারীদের জন্য এরই মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছে সরকার। বিনিয়ােগকারীদের দেয়া। হচ্ছে নানা ধরনের সুযােগ-সুবিধাও এরই মধ্যে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপান, চীন, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ নানা ধরনের শিল্পকারখানা গড়ে তুলেছে। 

বিশ্বের পণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়ায়ও ডিজিটাল প্রযুক্তি আনবে ব্যাপক পরিবর্তন। এক দেশ থেকে আরেক দেশে পণ্য পাঠানাের খরচ অনেক কমে যাবে। ইতিবাচক প্রভাব পড়বে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। বাংলাদেশও এর সুফল ভােগ করবে।এ বিপ্লবের সুফল পেতে বাংলাদেশ সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘােষণা দেয়ার মাধ্যমে আমাদের এ নতুন বিপ্লবে। শামিল হওয়ার সুযােগ করে দেন। তিনি। ২০১০ সালে সারা দেশে একযােগে ৪,৫০১টি ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করেন। ইন্টারনেটের প্রসারের ফলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এখন সহজে যুক্ত হতে পারছে জ্ঞানের মহাসড়কে। এর। পাশাপাশি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলাে যাতে ক্রমান্বয়ে রােবটিক্স, বিগ ডাটা অ্যানালিটিক্স। কিংবা ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সে জন্য সরকার ১২৯টি বিশেষায়িত ল্যাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।

দেশি-বিদেশি বিনিয়ােগ বৃদ্ধি করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ২৮টি হাইটেক ও সফটওয়্যার পার্ক তৈরি করেছে। এ বিপ্লবে। বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে দেশে ।

প্রথম বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ । মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় । প্রতিষ্ঠা এবং ১২ মে ২০১৮ মহাকাশে কৃত্রিম । উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের উৎপাদন ব্যবস্থায় গতি সঞ্চার হবে। শিল্প কারখানায় রােবট ও অটোমেশন প্রযুক্তি। কর্মক্ষেত্রের ঝুঁকি হ্রাস করবে। জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওষুধ তৈরির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের চাহিদা সৃষ্টি হবে।

অস্ত্রোপচারে প্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসা সেবাকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করবে। ব্যাংক খাতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামের মানুষ তথা সকল শ্রেণীর মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা যাবে। ফলে। অনলাইনে লেনদেন বৃদ্ধি পাবে।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব

অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে সমস্যা: 
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যেমন একদিকে বাংলাদেশে সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে তেমনি । এটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে শুরু করবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ফলে একদিকে যেমন নতুন কর্মসংস্থান হবে তেমনি অন্য মানুষের চাকরি হারানাের সম্ভাবনাও তৈরি হবে। স্মার্ট যন্ত্র বাংলাদেশের জন্য দুঃসংবাদের কারণ। হতে পারে, বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতে। প্রায় ৬০ লাখ লােক কাজ করে এ খাতে। রােবট ও স্মার্ট যন্ত্রের ব্যবহারে শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমে যাবে। অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। শুধু গার্মেন্টস নয়, আরাে অনেক পেশা, যেমনঃ হিসাবরক্ষক, আইন পরামর্শক, পরীক্ষক, রেস্টুরেন্টে সেবা প্রদানকারী ক্যাশিয়ার। ইত্যাদি পেশায় মানুষের ভূমিকা। অনেকটাই কমে যাবে। চালকবিহীন গাড়ি চালু হলে চালক অপ্রয়ােজনীয় হয়ে । দাড়াবে। অর্থনীতিবিদগণ মনে করেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বিশ্বব্যাপী অসাম্য ও দারিদ্র্য পরিস্থিতিকে আরাে প্রকট করে  তুলবে। 

তাই বলা যায়, এ বিপ্লব বাংলাদেশেও অসাম্য ও দারিদ্রতাকে প্রকট করে তুলবে।এ বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের তরুণ সমাজকে দক্ষ করতে না পারলে এবং দেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ঘটাতে না। পারলে প্রত্যেকটি সেক্টরে ধ্বংস নামতে পারে। 

এছাড়াও এ বিপ্লবের সবচেয়ে বড় হুমকি হলাে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত না করা। গেলে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নষ্ট হবে। ফলে মানুষ নানা ধরনের বিড়ম্বনা বা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মতাে ঘটনায় সমগ্র জাতিই ক্ষগ্রিস্ত হতে পারে।

পরিশেষে বলা যায় যে, অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রেও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রভাব হবে ব্যাপক। ব্যতিক্রমী পণ্যসেবার পাশাপাশি নিয়ত পরিবর্তনশীল গ্রাহক চাহিদা পূরণে । কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলােকে টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি ব্যবহারে সর্বোচ্চ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সরকারের দেশ পরিচালনা ও নীতিনির্ধারণেও ডিজিটাল বিপ্লব আনবে বড় পরিবর্তন। প্রযুক্তি বিপ্লব সরকারি সেবাকে একদিকে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসবে। অন্যদিকে তথ্য-প্রযুক্তিতে চরম উৎকর্ষ লাভকারী যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও  চীনের মধ্যে প্রযুক্তিগত দ্বন্দ্বে যে নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবই যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করবে, সেই আশঙ্কাও করছেন বিশ্লেষকেরা।

© অর্থনীতি জার্নাল

=============================

৪১তম বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি নির্দেশনা 

সিভিল_সার্ভিস_পরীক্ষা_পর্ব_০১_লিখিত_ইংরেজি

রিটেন পরীক্ষার ৯০০ নাম্বারের মধ্যে ২০০ বরাদ্দ থাকে ইংরেজিতে। চার(০৪) ঘন্টার এই পরীক্ষাটা প্রথম দিনেই হয়ে থাকে। এই পরীক্ষার পরের দিনই দেখবেন বেশ কিছু সিট খালি হয়ে গেছে 😞 । ক্যাডার পাওয়ার জন্য এই বিষয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই রিটেন প্রিপারেশনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় আপনাকে বরাদ্দ করতে হবে ইংরেজির জন্য।

একটু সিলেবাস নিয়ে কথা বলি। একটা Seen Comprehension থাকে। এখান থেকে আনসার করতে হবে ১০০ নাম্বার। বাকী ১০০ নাম্বার থাকবে রচনা এবং অনুবাদে। Comprehension থেকে আপনাকে প্রশ্ন, শব্দার্থ, সারমর্ম, চিঠি- সবকিছুই উত্তর করতে হবে। অনুবাদ থাকবে দুইটা। বাংলা থেকে ইংরেজি এবং ইংরেজি থেকে বাংলা। আর রচনাটা ৫০ নাম্বারের।

ইংরেজিতে ভালো করতে আপনাকে দুইটা বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। প্রথমটা হলো অনেক নতুন শব্দ জানতে হবে অথবা নতুন শব্দের অর্থ খুব ভালো অনুমান করতে জানতে হবে। দ্বিতীয়টা হলো যেকোন বিষয়ে ফ্রি-হ্যান্ড লিখতে জানতে হবে। এই দুই দক্ষতা অর্জন করতে পারলে আপনি চার(০৪) ঘন্টার পরীক্ষা ভালোই দিতে পারবেন।

আমি ইংরেজির জন্য একটা নিঞ্জা টেকনিক প্রয়োগ করেছিলাম। আমি ৮৫% সময় শুধু অনুবাদ অনুশীলন করেছিলাম। প্রথমে সাইফুর’স এর একটা অনুবাদ বই কিনেছিলাম। বইটা বেশ ভালো ছিলো। সময় নিয়ে আমি সবগুলো অনুবাদ অনুশীলন করেছিলাম। এতে আমি অনুবাদ করার ধরণটা বুঝতে পারি। এরপর শুরু করি পত্রিকা থেকে অনুশীলন। ঢাকা ট্রিবিউন এর বাংলা এবং ইংরেজি দুইটা ভার্সনই পাওয়া যায়। আপনি নিজে অনুবাদ করে ওদের সাথে মিলাতে পারবেন। তাছাড়া এখন Daily Star এর বাংলা ভার্সন পাওয়া যায়। আর বলে রাখি প্রথম আলোর প্রতিবেদন এবং Daily Star এর প্রতিবেদন ৮০% একই থাকে। তাই এই দুইটা মিলিয়েও অনুশীলন করা যায়।

কেন আমি শুধু অনুবাদ দিয়ে প্রিপারেশন নিয়েছিলাম তা একটু বলিঃ

আপনি অনুবাদ(বাংলা/ইংরেজি) অনুশীলন করলে সরাসরি ৫০ নাম্বার কাভার হবে। একটা প্যাসেজ পড়তেছেন, তার থেকে নতুন শব্দ শিখবেন এতে প্যাসেজের অনুশীলনও হয়ে যাবে। যদি পত্রিকা থেকে অনুশীলন করেন তাহলে নতুন টপিক নিয়ে লিখতে পারবেন যা রচনায় সাহায্য করবে। প্রশ্ন-উত্তর করার জন্য আপনাকে প্যাসেজ ভালোভাবে বুঝতে হবে যার জন্য প্রয়োজন প্রতিটি শব্দের অর্থ জানা। আপনি অনুবাদ করলে নতুন শব্দ জানতেও পারবেন সাথে সাথে ব্যবহারও শিখতে পারবেন। আর কিছু সুন্দর শব্দ জানা থাকলে সুন্দর সারমর্ম লিখতে আপনি হবে সিদ্ধহস্ত।

বাকি থাকলো শুধু চিঠি লিখার নিয়ম আর রচনার ডাটা। আশা করি বুঝাতে পেরেছি কীভাবে শুধু অনুবাদ চর্চা করে আপনি ইংরেজির সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে পারেন। শেষকথা বলি, ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্ন সহজ/কঠিন যাই হোক আপনাকে সব লিখে আসতে হবে। ৩৮ এর প্যাসেজ কঠিন ছিলো বলে অনেক রচনা সম্পূর্ণ লিখতে পারেন নাই। এটা বোকামি ছাড়া আর কিছু না। প্রশ্ন যেমনই হোক আপনাকে উত্তর সব করতে হবে। কঠিন প্রশ্নে অতিরিক্ত সময় দেয়া যাবে না।

To be continued…..

(কোন অপ্রত্যাশিত ভুল করে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমাকে বললেই আমি কারেকশন করে দিবো।)

ধন্যবাদ

সৌরভ বিজয়
সহকারি সচিব, বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারে (
৩৮তম বিসিএস, মেধাস্থান-৪র্থ)
=============================

#ঘূর্ণিঝড়_নিয়ে_কিছু_তথ্যঃ
⬛⬛ ২৬ মে (বুধবার) ২০২১ ভারতের উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড়– ‘ইয়াস’ (Yaas)।
▪️নামকরণ- ওমান।
▪️শব্দ- ফার্সি।
▪️অর্থ- 'সুগন্ধী ফুলের গাছ'। এর ভিন্ন কিছু অর্থও রয়েছে- ‘মরিয়া’ বা ‘হতাশা’ বা ‘দুঃখ’।
◾◾ইয়াসের আগে (১৭ মে)  ভারতের গুজরাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল– ‘তাউট’ (Tauktae); উচ্চারণ ‘তাউকতায়ে’।
▪️নামকরণ- মিয়ানমার।
▪️শব্দ- বার্মিজ।
▪️অর্থ- 'টিকটিকি জাতীয় এক ধরণের সরীসৃপ'।
◾◾ইয়াসের পরে ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট যে ঝড়টি আসবে তার নাম– 'গুলাব' (Gulab) [নামকরণ- পাকিস্তান]।
◾ইয়াসের পূর্ববর্তী কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম– নিসর্গ (বাংলাদেশ), গতি (ভারত), নিভার (ইরান), বুরেভি (মলদ্বীপ) এবং তৌকতাই (মায়ানমার)৷
◾ইয়াসের পরবর্তী কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম– গুলাব (পাকিস্তান), শাহীন (কাতার), জাওয়াদ (সৌদি আরব), অশনি (শ্রীলঙ্কা), সীতারাংগ (থাইল্যান্ড), মানদৌস (আরব আমিরাত), এবং মৌচা (ইয়েমেন)।
◾২০০৪ সালে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হওয়া পর প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের নাম ছিল– ‘অনিল’ (নামকরণ- বাংলাদেশ)।।👍
©#Engr_Sohag
বিসিএস রিলেটেড ভিডিও পেতে আমাদের 

=============================

=============================




★ লিংক: ইসলামিক লাইব্রেরি PDF (Google Drive)

bcspedia.blogspot.com

১। স্বপ্ন যাদের বিসিএস – অভিজ্ঞদের পরামর্শ


২। বিসিএস নিয়ে প্রচলিত ১০ ভুল ধারণা


৩। বিসিএস (প্রশাসন)-কে কেন সকল ক্যাডার এর রাজা বলা হয়


৪। যদি কূটনীতিক হতে চাও


৫। বিসিএস প্রিলিমিনারি - বাংলা


৬। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে ২৫ পরামর্শ


৭। ইংরেজির ভয় করতে জয় যা মানতে হয়


৮। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ভাল করার কৌশল: ইংরেজি সাহিত্য


৯। বিসিএস পরীক্ষায় ভাল করার কৌশল: গণিত


১০। বিসিএস পরীক্ষায় ভাল করার কৌশল: ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি


১১। বিসিএস পরীক্ষায় ভাল করার কৌশল: কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি


১২। সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ অংশে ভালো করার উপায়


১৩। সাধারণ জ্ঞানে অসাধারণ হওয়ার কৌশল


১৪। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা


১৫। বিসিএসের প্রস্তুতি: গাণিতিক যুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি


১৬। ভূগোল ও নৈতিকতায় ভালো করতে চাইলে


১৭। বিসিএসের বই পড়াই সব নয়


১৮। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তে



https://english-grammarblog.blogspot.com/2020/08/effective-sentence.html
https://english-grammarblog.blogspot.com/2022/03/all-about-completing-sentences.html
https://english-grammarblog.blogspot.com/2020/12/rules-of-changing-voice-active-to-passive.html
https://www.google.com/search?q=site%3Aenglish-grammarblog.blogspot.com
★ From Google Drive —

BCS Exam Syllabus (Download Now):

BCS Preliminary Test 

Download PDF

BCS Written Exam

Download PDF

https://bcspedia.blogspot.com/2022/04/preposition-shortcut-rules-techniques.html

https://bcspedia.blogspot.com/2020/10/blog-post_222.html

https://t.me/englishgrammarblog

https://bcspedia.blogspot.com/2022/03/full-guidelines-for-bcs-written-examination.html

https://bcspedia.blogspot.com/2022/03/1st-world-war-and-2nd-world-war.html

https://bcspedia.blogspot.com/search/label/%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A6%BE%20-%20Motivation

https://bcspedia.blogspot.com/2022/03/why-do-muslims-commit-terrorism.html

https://bcspedia.blogspot.com/2022/01/transformation-of-sentences.html

https://bcspedia.blogspot.com/2022/03/bcs-preliminary-test-last-minute-preparation-and-suggestion.html

🔔

https://bcspedia.blogspot.com/search/label/Earn%20Money

 

👍 CATEGORIES ⚝⚝⚝

#ওসমানি #আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান #মিশর #Egypt ১. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ১. হ্যান্ডনোট এবং তথ্যবহুল চিত্র ১০. নৈতিকতা মূল্যবোধ ও সুশাসন ১১. বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ও সমাধান ২. ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য ৩. বাংলাদেশ বিষয়াবলি ৪. আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ৪০০টি প্রশ্নোত্তর: কম্পিউটার এবং কম্পিউটার-প্রযুক্তি 43rd BCS ৫. ভাইভা বোর্ড ৫. ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব) পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ৫২ থেকে ৭১ ৬. সাধারণ বিজ্ঞান ৭ মার্চ ৭. কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি ৮. গাণিতিক যুক্তি ৯. মানসিক দক্ষতা অনুপ্রেরণা অনুপ্রেরণা - Motivation আইনকানুন আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক চুক্তি আন্তর্জাতিক বিষয়: সীমারেখা আন্তর্জাতিক সীমারেখা আপডেট আপডেট তথ্য আবিষ্কার ও আবিষ্কারক আলোচিত ১১ জন কবি-সাহিত্যিক ও তাঁদের রচনাবলী ইংরেজি ইংরেজি সাহিত্য উপাধি ও ছদ্মনাম এটর্নি জেনারেল এবার যাদের প্রথম বিসিএস কম্পিউটার কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি গণিত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক নাম গুরুত্বপূর্ণ শব্দ পরিচিতি চর্যাপদ চর্যাপদের কবিগণ জাতীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের শাখা এবং জনক জ্যামিতিক সূত্র দেশী বিজ্ঞানীরা নদ-নদী নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ পত্রিকা এবং ছদ্মনাম পদ প্রকরণ পররাষ্ট্রনীতি পরামর্শ পরামর্শ V. V. V. I. পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিমিতির (Mensuration) সূত্রাবলিসমূহ পাঁচমিশালী তথ্য + সাধারণ জ্ঞান পারিভাষিক শব্দ পুরাতন ও নতুন নাম প্রতিশব্দ প্রথম প্রকাশিত প্রস্তুতিহীন বিসিএস যাত্রা ফলা এবং যুক্তাক্ষর ফাঁদ প্রশ্ন ফিলিস্তিন Palestine ফ্রান্সের ইসলাম-বিদ্বেষ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট বাংলা বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের মিলবন্ধন বাংলা ব্যাকরণ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বাংলা শব্দার্থ বাংলা সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের দুই মহারথী বাংলাদেশ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বাংলাদেশ বিষয়াবলি বাগধারা বানান শুদ্ধিকরণ বিগত পরীক্ষাসমূহ বিপ্লব বিভক্তি বিসিএস পরামর্শ বিসিএস ভাইভা প্রস্তুতি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ভাষা আন্দোলন ভূগোল ভৌগোলিক উপনাম ভ্যাকসিন কূটনীতি এবং বাংলাদেশ মডেল টেস্ট মডেলটেস্ট মহাকাশ মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাহিত্যকর্ম মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বপূর্ণ খেতাব মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যভাণ্ডার যুক্ত বর্ণ লিখিত গাইডলাইন লিখিত পরীক্ষা লেখা ও লেখক শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি ও পরামর্শ শ্রেষ্ঠ বাঙালি ✏️✏️ সংবিধান সংবিধান সংশোধনী সদর-দপ্তর সভ্যতা সমাস সাজেশন সাধারণ জ্ঞান সাধারণ বিজ্ঞান সাম্প্রতিক সাহিত্য-উৎসর্গ সাহিত্যিক সাহিত্যে কনফিউশন স্থাপত্য ও স্থপতি স্পোকেন ইংলিশ All Things Review Bangladesh Constitution BCS Preliminary Question Analysis BCS Preparation Special Episodes BCS Questions Earn Money Eat Chew Drink Take Have ? English Grammar English Grammar Exercises with Answers English Grammar Test English Literature Essay Writing General Science ICT Idioms and Phrases International financial institutions Love Stories in Literature Nobel Prize One Word Substitution Preposition Quiz Redundancy বাহুল্য (দোষ) Shortcut to Preposition Spoken English Terrorism Transformation of Sentences 👍 Translation United Nations Vocabulary Warrant of Precedence World Wars

এটি বিসিএস পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ:


Literary Terms 


1. Simile (উপমা):

দুটি আলাদা বস্তু বা দুইজন ব্যক্তির মধ্যে as, like, resemble, the same as ইত্যাদি শব্দগুলাের উল্লেখ করে সরাসরি তুলনা করাকে simile বলে। 

Example -

• I wandered lonely as a cloud. 

• Youth (is) like summer morn.

• My heart is like a singing bird. 

• He is as cunning as a fox. 


2. Metaphor (রূপক):

দুটি আলাদা বস্তু বা দুইজন ব্যক্তির মধ্যে comparision এর শব্দসমূহ (যেমন: as, such, like ইত্যাদি) ব্যবহার না করেই তুলনা করাকে metaphor বলে। 

Example -

• Liza is a rose.

• Life is but a walking shadow. 

• Nazrul is fire.

• My brother was boiling mad. 


Note: একই জাতীয় বিষয়বস্তুর মধ্যে তুলনা হলে ......... Read More 


📓 পুরো আর্টিকেল/পোস্টটি পড়ুন