বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি
#আন্তর্জাতিক
সার্বভৌমত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ কী কী ? (৩৬তম বিসিএস লিখিত )
সার্বভৌমত্ব হল রাষ্ট্রের চরম ও চূড়ান্ত ক্ষমতা । এটি রাষ্ট্রের মূল বিষয় বলা হয় । রাষ্ট্রের অন্য ৩টি উপাদান থাকলেও এটির না থাকলে রাষ্ট্র বলা যায় না । সার্বভৌমত্বের নিমোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ লক্ষণীয়
(১) মৌলিক ক্ষমতা (originality- অরিজিনালিটি ):- এমন ক্ষমতা যার সমকক্ষ বা ঊর্ধ্বে কোন শক্তি নেই।
(২) চরম ক্ষমতা (absoluteness- এব্সোলিউট্নেস ):- নিরঙ্কুশ ও সীমাহীন ক্ষমতা।
(৩) সর্বব্যাপকতা ও সর্বজনীনতা (univarsality and comprehensiveness- ইউনিভারসেলিটি এন্ড কম্প্রেহেন্ সিভ্নেস):- এ ক্ষমতা সর্বজনীন ও সমভাবে পরিব্যাপ্ত।
(৪) স্থায়িত্ব (permanence-পার্মেনেন্স ):- এ ক্ষমতা স্থায়ী ও অক্ষুন্ন থাকে।
(৫) অবিভাজ্যতা (Indivisibility-ইনডিভাইজিবিলিটি ):- এটা এমন ক্ষমতা যা বিভক্ত করা যায়না।
(৬) অহস্তান্তর যোগ্য (Inalienability-ইন্এলিয়েনেবিলিটি ):- এমন ক্ষমতা যা হস্তান্তর যোগ্য নয়- এ ক্ষমতা বদল হওয়ার যোগ্য নয়।
৭) এককত্ব বা অনন্যতা (exclusiveness-
এক্সক্লো সিভ্নেস ):- এ ক্ষমতা একক ও অনন্য যার প্রতিদ্বন্দী কেউ নেই।
সার্বভৌমত্বের মীমাংসা না করে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা অসম্ভব কেন ?
উত্তর: সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা হবে আইন-বিধান দ্বারা যা মূলত সার্বভৌমত্বের মালিকের পক্ষ্য থেকেই আসবে। সার্বভৌমত্বের মীমাংসা না হলে একই বিষয়ে বহু রকমের আইন আসার সুযোগ থাকে, যার কারণে অনৈক্য ও বিশৃংখলা দেখা দিবে। সার্বভৌমত্বের মীমাংসা হলে- অর্থাৎ সার্বভৌমত্বের মালিক ঠিক হলে একই বিষয়ে বহু রকম আইন আসার সুযোগ বন্ধ হবে, একই সার্বভৌমত্ব থেকে প্রতিটি বিষয়ে একই আইন আসবে যার ফলে মানুষের মাঝে ঐক্য এবং শৃঙ্খলা বজায় থাকবে, সমাজ ও রাষ্ট্র একই রকম আইন দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত হবে। যেহেতু সার্বভৌমত্বের মীমাংসা না হলে অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে, যার কারণে সমাজ ও রাষ্ট্র ধবংস হবে, সেহেতু সার্বভৌমত্বের মীমাংসা না করে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা করা একেবারেই অসম্ভব।
////
পঞ্চশীল নীতি কী ?
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চশীল নীতি হল ভারত উদ্ভাবিত একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া । ভারতের জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি পঞ্চশীলের উপর স্থাপিত । পঞ্চশীল বলতে এখানে বলা হয়েছে-
(ক) প্রতিটি স্বাধীন দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল হওয়া,
(খ) দ্বন্দ্ব-সংঘাত পরিত্যাগ বা অনাক্রমণ নীতি গ্রহণ করা,
(গ) অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা,
(ঘ) পারস্পরিক সাম্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং
(ঙ) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল সমস্যার সমাধান করা ।
এই পঞ্চশীল নীতিই হল জোট নিরপেক্ষ নীতির মূলকথা । জওহরলাল নেহরু এবং চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই ছিলেন এই নীতির অন্যতম প্রবক্তা । এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলি এবং ইউরোপীয় রাষ্ট্র যুগশ্লাভিয়াও নির্জোট আন্দোলনে সামিল হন । স্টালিনের সঙ্গে মতভেদের ফলে যুগশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো কমিউনিস্ট ব্লক থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমি শক্তিগোষ্ঠীর সঙ্গে না গিয়ে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে পরিচালিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে যোগদান করেন । তাঁর আমন্ত্রণে জওহরলাল নেহরু ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে যুগশ্লাভিয়া যান এবং ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে মার্শাল টিটো ভারত সফরে আসেন । ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে ডিসেম্বর প্রচারিত এক যৌথ ঘোষণায় উভয় নেতা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রতি নিজেদের গভীর আস্থার কথা বর্ণনা করেন । ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে ভারত-তিব্বত চুক্তির পর তিব্বত ভারতের পঞ্চশীল নীতি মেনে নিয়েছিল।
-------
সংগৃহীত